মুসলিম উম্মাহর পবিত্র ভূমি মক্কায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ১৮ লাখ ৬২ হাজার ৯ শত ৯জন হাজি এবারের হজে অংশ গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ এক হাজার ৮ শত ২৯ জন (ব্যবস্হাপনা সদস্যসহ) হাজি ছিলেন।
সৌদি আরবের জাতীয় পরিসংখ্যান অধিদপ্তরের তথ্যে জানা যায়, এবছর বিশ্বের ১৬৪ দেশ থেকে মোট ১৩ লাখ ২৫ হাজার ৩ শত ৭২ জন এবং সৌদি আরব থেকে ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫ শত ৩৭ জন হজ পালন করেন। এবার বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।
তবে বাংলাদেশ থেকে হজ করতে এসে বার্ধক্য জনিত কারণে এবং বিভিন্ন রোগে ১৬ সেপ্টেম্বর ভোর পর্যন্ত ৪৭ জন হাজি মৃত্যুবরণ করেছেন বলে বাংলাদেশ হজ মিশন সূত্র জানায়।
শুধুমাত্র জয়পুর হাট জেলার পঞ্চবিবির হাবিবা ফেরদৌসি রিকতা, গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান বলে জানা যায়। এছাড়াও বার্ধক্যজনিত কারণে এবং বিভিন্ন রোগে অসুস্থ হয়ে মিশরের ২০, ইরাকের ৬, সুদানের ৪, আলজেরিয়ার ৪, মরক্কোর ৩, সোমালিয়ার ২, শিরিয়ার ২, তিউনিশিয়ার ২, লিবিয়ার ১, জর্দানের ১, ইয়েমেনের ১ এবং ফিলিস্তিনের ১ জন হাজির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর এবারই প্রথম হজের খুতবা পাঠ ও নামাজের ইমামতি করেন মসজিদুল হারামের প্রধান ইমাম মুফতি ড. আবদুর রহমান আল সুদাইস।
এ বছর যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে আগ থেকেই সৌদি সরকার কঠোর নিরাপত্তার ব্যাবস্থা গ্রহণ করেন। বিশেষ করে মিনায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের সময় যাতে কোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, সেই জন্য সৌদি হজ্জ কর্তৃপক্ষের সব সময় কঠোর নজরদারি ছিল।
এ বছরের হজে নিরাপত্তা এবং সেবা দানের কাজে নিয়োজিত ছিল প্রায় একলাখ নিরাপত্তা কর্মী। সেই সাথে সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের ৬০ হাজার, রেড ক্রিসেন্ট, রোবার স্কাউটের স্বেচ্ছাসেবকসহ আরোও ১৭ হাজার স্বেচ্ছাসেবক সেবার কাজ পরিচালনা করছেন। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন ২৩ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী।
হাজিদের পরিবহনের জন্য আছে ১৮ হাজার অত্যাধুনিক বাস। অসুস্থ হাজিদের সেবা দানে প্রস্তুত ছিল হেলিকপ্টার, ১ শত এম্বুলেন্স, ৫১ টি মেডিকেল বাসসহ ৫ হাজার শয্যা বিশিষ্ট ২৫ টি হাসপাতাল এবং ১৫৮টি প্রাথমিক স্বাস্হ্য সেবা কেন্দ্র।
এছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশসহ সৌদি আরবের দুইশত মিডিয়া কর্মী হজের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এবছরই তথ্য প্রযুক্তির সর্ব্বোচ্ছ ব্যবহার হয়েছে র্স্মাট ছাতা, ই-ব্রেসলেট ব্যবহারের মাধ্যমে।
বাংলাদেশ হজ মিশনের এটি সূত্র জানায়, ১৭ সেপ্টেম্বর শনিবার থেকে বাংলাদেশী হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। হাজিদের নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট সৌদি আরবের জেদ্দা থেকে রওনা হবে স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায়)।
ফ্লাইটটি রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ বিমান সৌদি আরব থেকে হাজিদের ফেরত আনতে ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত ২৯টি নির্ধারিত ও ১০৮টি অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করবে।
বিবার্তা/সাগর/কাফী