বাংলাদেশ-ভুটান-ইন্ডিয়া-নেপাল (বিবিআইএন) মোটরযান চুক্তির আওতায় পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা থেকে রওনা দেয়া কার্গোবাহী ট্রাক এসে পৌঁছলো ভারতের রাজধানী দিল্লিতে।
দুই দেশের স্থলসীমান্ত পার হয়ে এই প্রথম কোনো কার্গোবাহী যান প্রবেশ করল ভারতে। সোমবার দিল্লির পাতপারগঞ্জ ইনল্যান্ড কন্টেনার ডিপোতে (আইসিডি) পৌঁছয় কার্গোবাহী ট্রাকটি। ট্রাকটিকে স্বাগত জানান দিল্লির অভিবাসন দফতরের প্রধান কমিশনার বিবেক জোহরী।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন পাতপারগঞ্জ আইসিডির অতিরিক্ত কমিশনার বিনায়ক আজাদ, ভারতের পররাষ্ট্র ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা, দিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তারা।
পরে জোহরী জানান এটা একটা বড় দিন। এতে বাণিজ্য আরও সহজ হবে। বাংলাদেশ কার্গো ভারতে এবং ভারতের কার্গো সেদেশে প্রবেশের ফলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে সময়ের সাশ্রয় ও খচর কমবে। এতে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে।
বিনায়ক আজাদ বলেন ‘দুই দেশের কাছে এটা একটা ঐতিহাসিক দিন’।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সেলর জাহিদ-উল-ইসলাম জানান এই ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাসও আরো বাড়লো বলে মনে করেন তিনি।
এই প্রথম ভারতে সফরে এসে কার্গোবাহী ট্রাকটির দুই চালক মোতিউর ইসলাম (৩২) এবং মহম্মদ রাসেল (২৮) দুইজনেই নিজেদের খুশির কথা জানিয়েছেন। রাসেল জানান ‘এটা আমাদের কাছে খুবই গর্বের মুহূর্ত। আমি ভারতীয় রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে খুবই উপভোগ করেছি’।
প্রসঙ্গত গত ২৭ আগস্ট রওনা দেয় এই কার্গোটি। বাংলাদেশের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে কার্গোটি ভারতের প্রবেশ করে। পরে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা হয়ে দিল্লি পৌঁছায়।
এটি ছাড়ার পরই অবস্থান শনাক্তকরণ প্রযুক্তি জিপিএস দিয়ে কার্গোটির চলাচলের ওপর নজহরদারি রাখা হয়েছিল।
বিবিআইএন চুক্তি স্বাক্ষরের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনও ট্রাক বা কার্গো সরাসরি ভারতে প্রবেশ করতে পারত না। একইভাবে ভারতের কোনও ট্রাকও বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারত না। ২০১৫ সালের ১৫ জুন বিবিআইএন পরিবহন মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে বিবিআইএন মোটরযান চুক্তি (এমভিএ) স্বাক্ষর হয়।
এই চুক্তির আওতায় ট্রাক পরিবর্তন না করেই বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ভারতে কোনো পণ্যবাহী কার্গো প্রবেশের পথ খুলে যায়। শুধু তাই নয় এই চার দেশের মধ্যেই পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলেও কোনো বাধা থাকবে না।
বিবার্তা/ডিডি/কাফী