কোরবানির ঈদে পশু জবাইয়ের কোনো ছবি ফেসবুকে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দুই নেতৃস্থানীয় ইমাম। কলকাতার বিখ্যাত দুই মসজিদ, ‘নাখোদা’ ও ‘টিপু সুলতান’র প্রধান ইমামদের এই আবেদনে সমর্থন জানিয়েছেন অন্য গুরুত্বপূর্ণ ইমামরাও।
গত কয়েক বছর ধরেই কোরবানির ঈদের দিন পশু জবাইয়ের ছবি ফেসবুক-টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়ার নতুন ট্রেন্ড চালু হয়েছে। এ নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে বিতর্কও কম হয়নি। অনেকেই এরকম ছবি ফেসবুক-টুইটারে আদৌ শেয়ার করা উচিত কীনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এবার কলকাতার দুই গুরুত্বপূর্ণ ইমাম পশ্চিমবঙ্গের মুসলমান সমাজের কাছে সেই আবেদনই জানিয়েছেন।
নাখোদা মসজিদের ইমাম মুহম্মদ শফিক কাজমি বলেন, ‘অনেকেই আজকাল কোরবানির ছবি ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপে দিয়ে দিচ্ছেন। যদি কোনো হিন্দু ভাই সেটা দেখেন, তার বিশ্বাসে আঘাত লাগতে পারে। সেজন্যই আমি বারণ করেছি যাতে কেউ পশু জবাইয়ের ছবি ফেসবুকে না দেয়। পর্দা ঘেরা জায়গায় নিজেদের মতো করে কোরবানি দেয়াই উচিত, সকলের সামনে যেন না করা হয়- আমি এই আবেদনই জানিয়েছি।’
কলকাতার রেড রোডে রাজ্যের সব থেকে বড় ঈদের জামাত হয় প্রতিবছর। সেই নামাজ পরিচালনা করেন ফজলুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘কোরবানি তো মানুষ নিজের জায়গায় করবে, সেই ছবি হোয়াটসঅ্যাপে কেন দেবে? যারা পছন্দ করে, তারাও দেখবে আর যাদের জবাই অপছন্দ, তারাও তো দেখবে ওই ছবি। হিন্দু বা যারা নিরামিশাষী- তাদের মনে তো আঘাত লাগবে জবাইয়ের ছবি দেখে। এমন কিছু করাই ইসলামে নিষেধ, যাতে কারো মনে আঘাত লাগে। তাই জবাইয়ের ছবি এভাবে দেয়াটা ঠিক না।’
কোরবানির পশু জবাইয়ের ছবি বিবাদেরও জন্ম দিতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অন্য ধর্মের বিশ্বাসীদের কাছে অথবা নিরামিশাষী মানুষদের কাছে যেমন পশু জবাইয়ের ছবি দেখলে খারাপ লাগতে পারে, তেমনই শিশুদের মনেও ওই ছবি প্রভাব ফেলতে পারে, তারা ভয় পেতে পারে বলে মনে করেন পশ্চিমবঙ্গের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ইমাম।
রাজ্যের সব ইমামদের কাছে ইতিমধ্যেই আবেদন জানানো হয়েছে যাতে তারা এই বিষয়টি বিশেষভাবে প্রচার করেন। এছাড়া পর্দা ঘেরা জায়গায় পশু জবাই করা এবং বর্জ্য একটি নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ইমাম। সূত্র: বিবিসি
বিবার্তা/নিশি