গরুর মাংস খাওয়ার ‘শাস্তি’ হিসেবে ভারতে এবার গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন দুই নারী। পরে ধর্ষকরা এক দম্পতিকে পিটিয়ে হত্যা করে।
ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের মুসলিম অধ্যুষিত মেওয়াটে এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষণের শিকার এক নারীর অভিযোগ, ধর্ষণকারীরা গরুর মাংস খাওয়ার অভিযোগ তুলে ‘শাস্তি’ হিসেবে তাদের ধর্ষণ করেছে।
ওই ধর্ষিতা জানান, পরে ধর্ষণকারীরা তার চাচা-চাচীকে পিটিয়ে হত্যা করে।
এনডিটিভি’র খবরে বলা হয়, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে হরিয়ানার মেওয়াটে দুই নারীকে এক দল লোক ধর্ষণ করে। তাদের একজন পরে বলেন, তারা আমাদের গরুর মাংস খেয়েছি কিনা তা জিজ্ঞাসা করে। আমরা বলি, খাইনি। কিন্তু তারা জোর করে বলে, আমরা খেয়েছি এবং এ কারণে আমাদের ‘শাস্তি’ দেয়া হচ্ছে।
দিল্লির নারী অধিকারকর্মী শবনম হাশমির উপস্থিতিতে এ অভিযোগ করেন ওই নারী। যদিও পুলিশের দাবি, ধর্ষণের শিকার দুই নারী বা তাদের পরিবার অভিযোগপত্রে বিষয়টি উল্লেখ করেননি।
এখনো পর্যন্ত এ ঘটনার সঙ্গে ‘গোরক্ষা’ কমিটির সদস্যদের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এ ঘটনার তদন্তকাজ সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের কাছে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
এনডিটিভি’র খবরে বলা হয়, ২৪ আগস্ট মেওয়াটে নিজ বাড়িতে ২০ বছর বয়সী এক তরুণী ও তার ১৪ বছর বয়সী জ্ঞাতি বোনকে দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। এ সময় হামলাকারীরা বাড়ির গৃহকর্তা ও কর্ত্রীকে বেঁধে রাখে। পরে তাদের পিটিয়ে হত্যা করে।
প্রাথমিকভাবে হরিয়ানা পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও অনধিকার প্রবেশের অভিযোগ আনে। পরে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগও আনতে বাধ্য হয়।
ভারত জুড়ে গরুর মাংস খাওয়া ও বহনের অভিযোগে বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির অধিকাংশ রাজ্যে গোহত্যা ও গরুর মাংস কেনা-বেচা নিষিদ্ধ। এর মধ্যে হরিয়ানায়ও অন্তর্ভুক্ত। এজন্য ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং এক থেকে পাঁচ লাখ রুপি জরিমানার বিধান রয়েছে।
এ ঘটনার পর মুসলিম অধ্যুষিত মেওয়াটে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বিবার্তা/কাফী