পাক-ভারত সীমান্তে জোর প্রস্তুতি

পাক-ভারত সীমান্তে জোর প্রস্তুতি
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১২:৫২:১৭
পাক-ভারত সীমান্তে জোর প্রস্তুতি
ফাইল ছবি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

হামলার আশঙ্কায় নিয়ন্ত্রণরেখার দুই পাশে প্রস্তুতি জোরদার করছে পাকিস্তান এবং ভারত উভয়েই। খালি করা হচ্ছে গ্রাম, মহড়া দিচ্ছে যুদ্ধবিমান, মজুত হচ্ছে বাড়তি সেনা, গোলাবারুদ।

দুইদিন ধরেই নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারত নিজেদের চৌকিতে অস্ত্রশস্ত্র মজুত করছে বলে দাবি জানায় পাকিস্তান। তাই পরবর্তী পদক্ষেপে উরি এলাকার নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন গ্রামগুলো থেকে লোক সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে পাক সেনারা। উরিতে সেনা ছাউনির বিপরীতে সীমান্তে পাকিস্তানের জাওয়ন্দ বলে যে গ্রামটি আছে, খালি করে দেয়া হয়েছে সেটি। এছাড়া গতকাল থেকেই ইসলামাবাদের আকাশে উড়তে দেখা যায় যুদ্ধবিমান এফ-১৬।

তবে পাক বিমান বাহিনীর মুখপাত্র জাভেদ মোহাম্মদ আলি বলেন, ‘এই মহড়ার সঙ্গে ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক উত্তেজনার কোনো সম্পর্ক নেই। এটি রুটিন প্রক্রিয়া।’

অবশ্য ভারত একে যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবেই দেখছে। পাকিস্তানকে পাল্টা চাপে রাখতে দেশটি মিরাজ ২০০০ বিমান থেকে পরীক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীও বসে নেই। পরিস্থিতি সামলাতে ধর্মশালা থেকে অতিরিক্ত এক ব্রিগেড সেনা উরিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর যে রাস্তা গিয়েছে, সেই রাস্তা ধরে শুরু হয়েছে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ। নিরাপত্তার প্রয়োজনে শুধু গ্রামবাসীই নয়, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশকেও উরি এলাকায় নিয়ন্ত্রণরেখার আশেপাশে ঘেঁষতে দেয়া হচ্ছে না।

পুলিশের পক্ষ থেকে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিকে জানানো হয়, নিয়ন্ত্রণরেখায় ক্রমশ উত্তেজনা বাড়ছে। কুপওয়ারার কাছে এ দিন নিয়ন্ত্রণরেখায় সন্দেহজনক গতিবিধি নজরে এলে গুলি চালায় বিএসএফ। ঘটনায় কেউ হতাহত না হওয়ায় তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। আবার জম্মুর আখনুর এলাকা থেকে এক পাক নাগরিক গ্রেফতার হয়েছে। সে লস্কর জঙ্গি বলে বিএসএফের দাবি। এরই মধ্যে আজ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বারামুলাতে মারা যায় এক কিশোর। পরে তার মৃতদেহ ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় উত্তেজিত জনতা।

ইসলামাবাদের দাবি, নিয়ন্ত্রণরেখার নিকটবর্তী চৌকিগুলিতে ভারী অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ মোতায়েন করার কাজ শুরু করেছে ভারত। হামলার প্রস্তুতিতে মজুত করা হচ্ছে জ্বালানি তেল। পাক সংবাদমাধ্যমে এমনও অভিযোগ করা হয়েছে যে, যুদ্ধের প্রস্তুতিতে ভারত নিয়ন্ত্রণরেখায় বফর্স কামান, ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাচ্ছে। আর এই সামরিক প্রস্তুতি দেখভালের পেছনে রয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

অভিযোগ নাকচ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, উরি হামলার পর জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে কাশ্মীরে। একই সঙ্গে ভারতের চৌকি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে পাক সেনারা। পাল্টা জবাব দিতেই ভারতকে নিয়ন্ত্রণরেখায় নিজের প্রস্তুতি বাড়াতে হচ্ছে। তার মানে এই নয়, ভারত যুদ্ধের জন্য তৈরি হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বরং পাক হামলার আশঙ্কায় জম্মু-কাশ্মীরসহ গোটা পশ্চিম সীমান্তকে সতর্ক করেছে। সুরক্ষা বাড়ানো হয়েছে পাঞ্জাব, রাজস্থানের আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণরেখাতেও। সতর্ক করা হয়েছে গুজরাট ও মহারাষ্ট্র সরকারকে।

পাকিস্তানের সক্রিয়তা নিয়ে শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে কথা হয়েছে মেহবুবা মুফতির। পরে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে রাজনাথের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরও। পরিস্থিতির দাবি মেনে প্রয়োজনে কাশ্মীরে সেনার গতিবিধি বাড়ানোর পক্ষেও একমত হন দুই মন্ত্রী।

এরই মধ্যে আজ যৌথ মহড়ায় অংশ নিতে পাকিস্তানে পৌঁছেছে রুশ সেনা। শনিবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরের গিলগিট, বালুচিস্তানে ওই মহড়া হওয়ার কথা। সেকারণে দুই দিন আগে থেকেই ওই আকাশসীমায় বাণিজ্যিক বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। রাশিয়ার এই পদক্ষেপে কূটনৈতিকভাবে অস্বস্তিতে ভারত।

বিবার্তা/নিশি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com