ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের সেনাঘাঁটিতে চলতি মাসের ১৮ তারিখের হামলাকে কেন্দ্র করে নিজ দেশেই চাপের মুখে রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত কয়েকদিন ধরেই তিনি পাকিস্তানের প্রতি একের পর এক বার্তা দিচ্ছেন। এর মধ্যেই সোমবার সিন্ধু-চুক্তি বৈঠকের পর বিষয়টি নিয়ে আবারও মুখ খোলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘রক্ত এবং পানি একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।’ এ বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার শিরোনাম করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।
নরেন্দ্র মোদির এমন মন্তব্যের পর প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি সিন্ধু-চুক্তি নিয়ে কড়া মনোভাব দেখাতে চলেছে ভারত? দীর্ঘদিনের চুক্তি ভেঙে তবে কি সিন্ধুর বেশিরভাগ পানি পাকিস্তানকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না? সরকারিভাবে এখনও পর্যন্ত এমন কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়নি। তবে সূত্র বলছে, তেমনটাই ভাবনাচিন্তায় রয়েছে সরকারের।
সরকারের গুরুত্বপূর্ণ আমলাদের নিয়ে সোমবার বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওই বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং বিদেশ সচিব এস জয়শঙ্করও ছিলেন। সেখানে প্রায় ৫৬ বছর আগের সিন্ধু পানিচুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকেই মোদি মন্তব্য করেন, ‘রক্ত এবং পানি একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না!’
১৯৬০ সালের ওই চুক্তি অনুযায়ী ভারতের পশ্চিম দিকের তিনটি নদীর পানি পাকিস্তান ব্যবহার করে। ওই নদীগুলো হচ্ছে সিন্ধু, চেনাব এবং বিতস্তা (ঝিলম)। আর অপেক্ষাকৃত পূর্ব দিকের তিন নদী বিপাশা, রবি ও শতদ্রুর পানি ব্যবহার করে ভারত। কিন্তু, উরির ঘটনার পর পরিস্থিতি পাল্টেছে।
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল আইয়ুব খানের মধ্যে ওই চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী সিন্ধুর মাত্র ২০ শতাংশ পানি ভারত ব্যবহার করতে পারে। এবার এই পানির বেশিরভাগ ব্যবহার করে জম্মু-কাশ্মীরের সেচ এলাকায় নিতে চায় ভারত। ওই জলে প্রায় ছয় লাখ হেক্টর এলাকাকে সেচের আওতায় আনা যাবে। যদিও কেউ কেউ মনে করেন, সিন্ধুর পানি আটকে দিলে জম্মু-কাশ্মীর এবং পঞ্জাবের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে পড়বে। তবে, ভারত সরকারের যুক্তি, তা যাতে না হয় সেজন্য তিনটি বৃহৎ বাঁধ গড়ে তোলা হবে সিন্ধুর বুকে।
বিবার্তা/ইফতি