ইথিওপিয়ার ওরোমিয়া এলাকায় এক ধর্মীয় উৎসব চলাকালীন বিক্ষোভে অন্তত ৫২ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অসংখ্য মানুষ। সোমবার দেশটির সরকারের বরাত দিয়ে বিবিসির অনলাইন ভার্সনে এ খবর প্রকাশ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাজধানী আদ্দিস আবাবা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে বিশোফতু শহরে একটি ধর্মীয় উৎসবে মিলিত হয়েছিলেন লাখো মানুষ। উৎসবে অংশগ্রহণকারী কিছু লোক ওরোমো সম্প্রদায়ের সরকার বিরোধী প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে তাদর মাথার ওপর হাতের কব্জি রেখে ক্রস বানায়।
এ ঘটনার পরপরই উৎসবস্থলে বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়। প্রতিবাদকারীরা পাথর ও বোতল নিক্ষেপ করে এবং নিরাপত্তা বাহিনী প্রথমে লাঠিচার্জ করে এবং পরে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে হুড়োহুড়ি লেগে গেলে পদপিষ্ট হয়ে অনেকে মারা যান।
অন্যদিকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হেইলেমারিয়াম দেসালেন বলেন, বিক্ষোভকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবেই মারপিট শুরু করে, ফলে প্রাণ হারাতে হয় অনেক সাধারণ মানুষকে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিবর্ষণের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত্ব একটি টেলিভিশনে দেয়া বক্তব্যে তিনি সামরিক বাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, তারা সবসময়ই জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চান। যে ‘অপশক্তি’ তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
অবশ্য বিক্ষোভকারীদের দাবি, তারা শান্তিপূর্ণ আচরণ করেন। জাওয়ার মোহাম্মেদ নামে একজন মানবাধিকার কর্মী জানান, বিক্ষোভে অন্তত ৩০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে।
মোহাম্মদ নামের একজন বিক্ষোভকারী টাইনারায়ন পিপল’স লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) ইঙ্গিত করে বলেন, ‘সরকার স্বৈরাচারী। দেশে কোনো সাম্য নেই, বাকস্বাধীনতা নেই। আছে কেবল টিপিএলএফ।’
তৎকালীন টিপিএলএফ ১৯৯১ সালে মেদ্দিসতু হাইলে মারিয়ামের একনায়কত্বের পতন ঘটায়। বর্তমানে এটি রাজনৈতিক দল হিসেবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করছে বলে অভিযোগ উঠছে।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর বিশোফতু শহরের ওরোমো অঞ্চলে লেক হারসাদির তীরে বর্ষা ঋতুর বিদায় উপলক্ষে ওরোমো সম্প্রদায়ের ইরিচা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কয়েক হাজার লোক জড়ো হয়। তারা এ হ্রদটিকে পবিত্র মনে করে। সূত্র: বিবিসি ও এএফপি
বিবার্তা/নিশি