ঝালকাঠিতে দুই বিচারক হত্যা মামলায় আসাদুল ইসলাম আরিফের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে তাঁর করা আবেদন খারিজ করে দেয়া হয়েছে।
আজ রবিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আসাদুল ইসলামের আইনজীবী এন কে সাহা বলেন, মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আসাদুলের রিভিউ খারিজ হয়েছে। এই রায়ের ফলে শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলাভাইসহ ছয় জঙ্গির মত আরিফকেও যেতে হবে ফাঁসিকাষ্ঠে। আরিফের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী এন কে সাহা।
২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠি জেলার সিনিয়র সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ ও জগন্নাথ পাঁড়ের গাড়িতে বোমা হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনায় বোমা হামলাকারী ইফতেখার হোসেন মামুন, জেলা জজ আদালতের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আব্দুল মান্নান ও ও দুধ বিক্রেতা বাদশা মিয়া আহত হন। ওই হত্যা মামলার রায়ে ২০০৬ সালের ২৯ মে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রেজা তারিক আহম্মেদ জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলাভাই, শায়খের ভাই আতাউর রহমান সানি, জামাতা আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হোসেন মামুন, খালেদ সাইফুল্লাহ (ফারুক) ও আসাদুল ইসলাম আরিফকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
এদের মধ্যে আসাদুল ইসলাম আরিফ পলাতক থাকায় সে সময় আপিলের সুযোগ পাননি। বাকি ছয় জঙ্গির ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে ২০০৬ সালের ৩১ আগস্ট তাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখে উচ্চ আদালত। এরপর ওই বছরের ২৮ নভেম্বর তখনকার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছির হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ হাই কোর্টের মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে ছয় জঙ্গির জেল আপিল খারিজ করে দেয়।
পরের বছর ৪ মার্চ রাষ্ট্রপতি ছয় জঙ্গির প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দিলে ২৯ মার্চ রাতে দেশের বিভিন্ন কারাগারে ছয় জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ছয় শীর্ষ জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর ২০০৭ সালের ১০ জুলাই এ মামলার আরেক আসামি আসাদুল ইসলাম আরিফ ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার হন। ওই বছর জুলাই মাসে হাই কোর্টে আপিল করেন তিনি। শুনানি শেষে হাই কোর্ট তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। পরে আপিল বিভাগেও একই সাজা বহাল থাকে।
আপিল বিভাগের দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহালের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আরিফ যে আবেদন করেছিলেন, রবিবার তাও খারিজ হয়ে গেল। বিচারক হত্যাকারী এই জঙ্গি এখন কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। তিনি প্রাণভিক্ষা না চাইলে কিংবা আবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে কোনো বাধা থাকবে না।
বিবার্তা/জিয়া