যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মামলার রিভিউ রায় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সোমবার তিনি এক অনুষ্ঠানে বলেন, আমি ভেতরে ভেতরে খুব উদ্বিগ্ন। আগামীকালের জন্য। অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম তার মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনায় যে আবেদন করেছেন, মঙ্গলবার তার রায় দেবে আপিল বিভাগ।
রিভিউ আব্নে খারিজ হলে একাত্তরের এই বদর নেতার ফাঁসিকাষ্ঠে যাওয়া অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যাবে। প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ তার থাকলেও এপর্যন্ত কোনো যুদ্ধাপরাধীর আবেদন মঞ্জুর করেননি রাষ্ট্রপতি।
দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মীর কাসেমের রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তিতে সবচেয়ে বেশি সময় লাগছে। অন্যদের চেয়ে দ্বিগুণ সময় পেয়েছেন তিনি।
দণ্ড এড়াতে মীর কাসেম বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আপিল বিভাগে শুনানিতেও ‘লবিংয়ের জন্য’ তার ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ের কাগজপত্র আদালতে দাখিল করেছিলেন।
সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার একটি বক্তব্য ধরে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা সভা ডেকে প্রতিবাদ জানালে তখন আ্যাটর্নি জেনারেল মীর কাসেমের রিভিউ শুনানির সময়টিতে অন্য বিষয়ে কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেয়ার অনুরোধ করেছিলেন।
সোমবার পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের উদ্যোগে সুপ্রিম কোর্টের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় অ্যাটর্নি জেনারেল যখন উদ্বেগের কথা বলছিলেন, তখন দর্শকসারিতে আইনজীবীদের প্রাধান্য ছিল।
আইনজীবীদের উদ্দেশে মাহবুবে আলম বলেন, গত পরশু (শুনানির সময়) সবাই যেভাবে উপস্থিত ছিলেন, আগামীকালও উপস্থিত থাকবেন। আপনাদের উপস্থিতিটাই বিরাট প্রতিবাদ।
বক্তব্যে উদ্বেগের কারণ ব্যাখ্যা করেননি যুদ্ধাপরাধের মামলাগুলো সর্বোচ্চ আদালতে পরিচালনাকারী মাহবুবে আলম। পরে অবশ্য তিনি বলেন, কনসার্ন লইয়ার হিসেবে তো (রায়ের আগের দিন) আমি উদ্বেগ প্রকাশ করতেই পারি।
ইতোমধ্যে আপিল বিভাগের মঙ্গলবারের কার্যতালিকায় ১ নম্বর ক্রমিকে মীর কাসেমের রিভিউ আবেদনটি এসেছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তা জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, রায় বহাল থাকলে আমরা সবাই আনন্দিত হব, খুশি হব।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়। এরপর ৮ মার্চ আপিল বিভাগের রায়েও একই সাজা বহাল থাকে। এরপর রিভিউ আবেদন করেন মীর কাসেম। মঙ্গলবার রিভিউয়ের রায় ঘোষণার কথা রয়েছে।
বিবার্তা/রোকন/কাফী