দুই মন্ত্রীর শপথভঙ্গ, রিটের শুনানি বৃহস্পতিবার

দুই মন্ত্রীর শপথভঙ্গ, রিটের শুনানি বৃহস্পতিবার
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ০৮:২১:০০
দুই মন্ত্রীর শপথভঙ্গ, রিটের শুনানি বৃহস্পতিবার
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+
আদালত নিয়ে মন্তব্য করে অবমাননার দায়ে দণ্ডিত কামরুল ইসলাম ও আ ক ম মোজাম্মেল হকের মন্ত্রী ও সাংসদ পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটের শুনানি হবে কাল বৃহস্পতিবার। মঙ্গলবার প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাই কোর্ট বেঞ্চ এই দিন রাখে। 
 
রিট আবেদনকারী অ্যাডভোকেট মো. ইউনুছ আলী আকন্দ নিজেই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। ইউনুছ আলী শুনানির জন্য আদালতে দাঁড়ানোর পর বিচারক তাকে বলেন, শপথ ভঙ্গ করলে এর লিগ্যাল কনসিকোয়েন্স কী- আমি যতদূর দেখেছি, সংবিধানে সুনির্দিষ্ট কিছু বলা নেই। যেহেতু সংবিধানে কিছু নেই, তাই উপমহাদেশের অন্য কোথাও এ রকম কিছু আছে কি-না? শপথ ভঙ্গ করলে কী হবে- সে বিষয়ে রায় থাকলে তা আদালতে দেখাতে হবে। আইনজীবী ইউনুছ এ সময় আদালতের কাছে রুল চান। 
 
জবাবে বিচারক বলেন, আগে প্রাথমিক উপাদান দেখতে হবে, আপিল বিভাগের (দুই মন্ত্রীর অবমাননার) রায়ও দেখতে হবে। রিট আবেদনের যুক্তি জানতে চাইলে বক্তব্যের এক পর্যায়ে ইউনুছ বলেন, ‘পাবলিক সার্ভেন্ট’ হিসেবে তারা পদে থাকতে পারেন না।
 
এ সময় বিচারক বলেন, তারা পাবলিক সার্ভেন্ট না। তারা সংবিধান অনুসারে কাজ করেন। আপনি পড়াশোনা করে আসেন। আমরা আপনার দ্বারা আলোকিত হতে চাই। যুদ্ধাপরাধী মীর কাশেম আলীর চূড়ান্ত রায়ের আগে সর্বোচ্চ আদালতকে নিয়ে করা মন্তব্যের জন্য দুই মন্ত্রীকে আদালত অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের আপিল বিভাগ গত ২৭ মার্চ রায় দেয়। আপিল বিভাগের ওয়েবসাইটে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, সংবিধানে বর্ণিত আইনের শাসন রক্ষার যে শপথ বিবাদীরা নিয়েছেন, সেই দায়িত্বের প্রতি তারা অবহেলা করেছেন। তারা আইন লঙ্ঘন করেছেন এবং সংবিধান রক্ষা ও সংরক্ষণে তাদের শপথ ভঙ্গ করেছেন।
 
আদালতের রায়ে শপথ ভঙ্গ হওয়ায় দুই মন্ত্রী পদে থাকার অধিকার হারিয়েছেন বলে মত দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক। বিএনপির পক্ষ থেকেও দুই মন্ত্রীর অপসারণ চাওয়া হয়। এই প্রেক্ষাপটে গত শনিবার দুই মন্ত্রীকে উকিল নোটিস পাঠান ইউনুছ আলী। ‘সংবিধান রক্ষার শপথ ভেঙেছেন’ বলে সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ আসার পরও তারা ‘কোন কর্তৃত্ববলে’ পদে রয়েছেন, তা জানতে চাওয়া হয় সেখানে। 
 
নোটিস পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই মন্ত্রীর জবাব চেয়েছিলেন ইউনুছ। তা না পেয়ে সোমবার তিনি রিট আবেদন নিয়ে হাই কোর্টে যান, যা মঙ্গলবার আদালতের কার্যতালিকায় আসে।
 
রিট আবেদনে বলা হয়, আপিল বিভাগের ওই রায়ের পর মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য পদ ‘আঁকড়ে থাকার কোনো অধিকার’ কামরুল ও মোজাম্মেলের নেই। অবমাননার দায়ে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা দেয়ার পর তাদের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য পদে থাকা ‘পাবলিক সার্ভেন্ট ডিসমিসাল অন কনভিকশন অর্ডিনেন্স-১৯৮৫’ এর পরিপন্থি।
 
তারা অবৈধ ও আইনি কর্তৃত্ব ছাড়াই পদে রয়েছেন। সংবিধান সুরক্ষায় শপথ ভঙ্গের মাধ্যমে তারা মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য হিসাবে নেওয়া শপথ ভেঙ্গেছেন। রায়ের বিষয়ে মোজাম্মেল শনিবার এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বলেন, তিনি ‘জেনেশুনে’ সংবিধান লঙ্ঘন করেননি। আর কামরুল মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, একাত্তরের ঘাতকদের বিচার একটা চলমান প্রক্রিয়া। এই বিচারের পক্ষে আছি, থাকব। বিচার প্রত্যাশীদের পক্ষে আমার মুখে কথা বলেই যাব।
 
বিবার্তা/জিয়া
 
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com