তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ভঙ্গ করে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল কর্তৃক ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ প্রকাশিত ‘গণবিজ্ঞপ্তি’কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবেনা জানতে চেয়ে বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি জে. এন. দেবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
বেসরকারি সংস্থা উবিনিগ (প্রা.) লিমিটেড, প্রজ্ঞা ও প্রত্যাশার এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার এই রুল জারি করা হয়। রুলের জবাব দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের দুই সচিব এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের কোঅর্ডিনেটরকে দুই সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছে।
উক্ত ‘গণবিজ্ঞপ্তি’ অনুযায়ী যে কোনো প্রতিষ্ঠান তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট, কার্টন বা কৌটার উপরিভাগের পরিবর্তে নিম্নভাগে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ করতে পারবে। তবে, বাংলাদেশে বিদ্যমান ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫’ (২০০৫ সালের ১১ নং আইন) - এর ১০ ধারা অনুযায়ী, “তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট, মোড়ক, কার্টন বা কৌটার উভয় পার্শ্বে মূল প্রদর্শনী তল বা যে সকল প্যাকেটে দুইটি পার্শ্বদেশ নাই সেই সকল প্যাকেটের মূল প্রদর্শনী তলের উপরিভাগে অন্যূন শতকরা পঞ্চাশ ভাগ স্থান জুড়িয়া তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি সম্পর্কে, রঙিন ছবি ও লেখা সম্বলিত, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সতর্কবাণী, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে মূদ্রণ করিতে হইবে।”
ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০১৫ দ্বারা নির্ধারিত ১৯ মার্চ ২০১৬ তারিখের পর থেকে তামাকজাত দ্রব্যের মোড়ক বা প্যাকেটে আইন অনুযায়ী সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ ব্যতীত কোনো তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় কিংবা বাজারজাত করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল উক্ত ‘গণবিজ্ঞপ্তি’প্রকাশ করায় আইন অমান্য করে তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদন ও বিক্রয়কারী কোম্পানিগুলো তামাকজাত দ্রব্য বাজারজাত করছে। এমতাবস্থায়, বাদী পক্ষের আবেদন অনুযায়ী হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারী করেন এবং পরবর্তী আদেশ প্রদানের জন্য আগামী ০২ নভেম্বর ২০১৬ তারিখের কার্যতালিকায় মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ প্রদান করেন।
আবেদনকারীদের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক এবং মঞ্জুর আলম।
বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন