বাঙালি নদীতে দুলে উঠা রিসতা
চক্রবৃদ্ধিহারে সুদ বাড়ে, আসল বাড়ে না; ঔখানে প্রসূন মেলা, এখানে ময়না কাঁটা
গোকূলে বাড়িছে হৃদয় যাতনা; সখা, তুমিও কী বোঝোনা নাকি মন বিহারের বাহানা?
ফুল হয়ে আর ফুটিওনা মনকলি;
নূহুর নৌকায় একাই দিয়েছি দুটি পদের ধূলি, প্রস্তুত কিস্তি
জোড়ায় জোড়ায় ওঠে শালিক পায়রা, পালে উড়েছে ফিঙে,
আকাশের প্রাণ উড়ন্ত মেঘগুলি
বাঘিনীর গর্জনে বন কাঁপে না
শুধুই নিঃসঙ্গ ঢেউয়ের ফেনা, গোধূলির নাচ কেউ দেখে না-
প্লাবন রাতে সামলায় ওরা যৌথ ঝড়ের ঝাপটা;
পিছুটান মানেই একপা পিছিয়ে যাওয়া!
মিথের নৌকায় সব দোকা দোকা, মগজ জুড়ে
বিবর্তনের খেলা: কে এলো আর কে গেলো?
অবিচল ছিলাম আমি একা, অবিচলই থাকব,
একটা জীবন শুধু নিজেকেই ভালোবেসে যাবো।
জেগে ওঠা কালপুরুষ আর সুখতারা দেখে
জেনে যাব: কেমন আছো মন্ডল বাড়ির মেয়েটা
কার ঠোঁটে মধু ঢালছো - আর কী ভেবে বলে
উঠছো-‘কাপুরুষ কোথাকার, একদম ন্যাকা’
সাগরসঙ্গম
মরুভূমি ক্যারাভানের মুজরা ছাড়ো।
এবার তুমি
সৈকতে আসো
মায়াবী মনে মরীচিকা নাচো
এলাচি বনে কিচিরমিচির বাজো।।
ঝাউবনে বসে বসে মহুয়ার বাসনা নেবো
কুসুম কিরণ ফুরিয়ে গেলে
তোমার কোমরে চিলিক দেয়া চন্দ্র হবো
ও প্রিয়তম
ভনিতা নয় কোনো
তুমুল জোয়ারে উথলে ওঠো
নোনা জলে ঢেউ তোলো, অবিরাম ভেসে যাবো;
আজ তোমার সৈকতে বসে সারিন্দা বাজাবো।।
গগনচুম্বি ভবন থেকে নেমে এসে ঢাকা শহরের একটা ভূমিকম্প দেখলাম
রাতের ঝলকানি জুড়ে রঙ খেলে তুমুল আঁধার
কপাটে বসে ঝিঁমায় অতন্দ্রপ্রহরী নিশিরাজ
বাতাসে মিশে যায় মশামারা পাউডার
মরটিন ধোঁয়ায় ওড়ে বস্তি থেকে ভেসে আসা গাঁজার ঘোরলাগা সুবাস-
মাঝরাতে হঠাৎ তুমুল সোরগোল তোলে মায়াচোখী পক্ষী ‘কাক’
গলি থেকে ভেসে আসে ভবঘুরে কুকুরের ঘেউ ঘেউ ডাক
শীতাতপ ফ্ল্যাটের বারান্দায় ঝুলে আছে কামিনির রাগ- বিড়ালছানাটি কোনোভাবেই ঘরে ঢুকতে পারেনি আজ - তবু সকালের আলো এসে বলে গেল আঁচড়ে ভরে গেছে সবগুলো খাঁজ - প্রচণ্ড ঝাঁকুনি বয়ে গেছে বিছানায় - দোলনায় দুলছিলো সব-
রিখটার স্কেলে কতো তা জানার আগেই পায়ের নিচে পড়তে থাকলো সব
দু’মিনিট পর ঘুম ভেঙে উঠে দেখি রাস্তায় রাস্তায় কলরব
দরজায় পড়ে আছে এক জটলা শব
মানিব্যাগ থেকে চাবিটা বের করলাম, অবলীলায় খুলে ফেললাম ক্যাচিগেটের তালা, অথচ ওদেরও কারো মরার ইচ্ছা ছিলো না, রাতের মিষ্টি ঘুমভাঙ্গা সময়ে কিছু বুঝে উঠার আগেই পদদলিত হয়ে গেছে ওরা-
শুধু ওড়না জড়ানো একটা জবুথবু দেহ বলে দিচ্ছে অপূর্ণ সংগমের কথা - খালিগায়ে লুঙ্গিপরা দেহটির পাশে সিগারেটটি এখনো জ্বলা!
বর্ষা জোছনায় মধুচন্দ্রিমায় কষ্টবিলাস
মাঝে মাঝে কিছু সময় কাটে যাতনায়
যন্ত্রণাকাতর কিছু বিরহী সময় আমাকে আদর করে
কোলে তুলে নেয় পরম মমতায়।
সুখ দেয় কিছু যন্ত্রণায়!
তোমাকে নিয়ে - না তাকে - অন্যকেউ বা অন্যকিছু
ভর করে - আমার সুখের মতো বিরহে - যন্ত্রণা কাতর বিরহে।
বন্ধ্যা দেবীগণ! যাচিত বিরহের কোলজুড়ে নেমে আসে
ফুটফুটে জোছনা সন্তান।
একপশলা নোনতা বৃষ্টি ক্ষণিক পরপর-
তোমাকে জড়িয়ে ধরে - এবং তাকে, কাঁদার কথা ছিল না
তবু কেঁদেছিলাম - বেঘোরে কেঁদেছি সেদিন মধ্যরাতে
অনেকদিন পর ঝরেছে মুক্তা পানি - অঝোরে।
ঝর্ণার মতো তরলিত সুখ ঢলেছে দু‘চোখ থেকে - অবিরত
টপটপ করে।
দু’এক ফোটা ছুঁয়ে গেছে তোমাকে - হয়তো তাকে।
মাঝে মাঝে কিছু সময় কাটে - চঞ্চলতায়।
প্রথম বর্ষার যৌবন জোছনায় পশ্চিম আকাশের বিধবা মেঘ
আর নবোঢ়া পূর্ণিমা গড়াগড়ি খায়
ওদিকে- পূবের আবছা আলোয় বিজলি মেয়ে আলোক ঝলকায়
কিছু সময় ভালো লাগে নীরবে একা - অসহ্য যন্ত্রণায়
যন্ত্রণাকাতর কিছু বিরহী সময় আমাকে আদর করে
কোলে তুলে নেয় - পরম মমতায়।
সুখ পাই কিছু ব্যর্থতায়, সুখ দেয় কিছু অহমিকায়!
বিবার্তা/ফারিজ/জিয়া