পোষা প্রাণীদের ভেতরে কুকুর কিংবা বিড়ালের প্রতি আমাদের আগ্রহটা একটু বেশিই দেখা যায়। আর পোষা প্রাণী হিসেবে না থাকলেও আমাদের দৈনন্দিন জীবনের খুব কাছের আর অত্যন্ত পরিচিত একটি প্রাণী হচ্ছে কুকুর। রাস্তাঘাটে, হাটেমাঠে, যেখানে-সেখানে এই প্রাণীটির দেখা পাই আমরা। তবে চলার পথে কুকুরদের সাথে পরিচিতিটা দীর্ঘ হলেও এদের সম্পর্কে অনেক কিছুই কিন্তু জানি না আমরা। জানলেও সেটা ভুল। এই যেমন, কুকরদের প্রবলভাবে লেজ নাড়ানোটাকে আমরা তাদের খুশি প্রকাশের অংশ বলে মনে করি। তবে আপনি কি জানেন, মোটেও এই লেজ নাড়ানো কেবল তাদের খুশির বহিঃপ্রকাশ নয়? চলুন জেনে আসি এমনই কিছু কুকুর সম্পর্কে আমাদের জানা ভুল ধারণাকে।
কুকুরে রং দেখতে পায় না বা কালার ব্লাইন্ড: এই কথাটা তো একবার হলেও শুনে থাকবেন যে কুকুরেরা সাধারণত কালো আর সাদা ছাড়া কোন রং দেখতে পায় না। অর্থাৎ, তারা কালার ব্লাইন্ড। কিন্তু বাস্তবে মোটেও তা নয়। মানুষ এবং কুকুর- দুজনের চোখে রেটিনাতেই রড ও কোন থাকে। তবে মানুষের রেটিনাতে ফোভিয়া নামক একটি উপাদান বিদ্যমান থাকার কারণে তারা সব ধরনের রং দেখতে পায় আর কুকুরেরা সামান্য কিছু রং, যেমন- কালো, সাদা, বেগুনি, হলুদ ও নীল দেখতে পায়। তাই কুকুরদের দৃষ্টিকে মোটেই সাদা-কালো বলা যায় না।
কুকুরের লেজ প্রবলভাবে দুলছে অর্থাৎ, সে খুশি: মোটেও না! প্রথমত, লেজ দ্বারা একটি কুকুর কেবল তার খুশিই নয়, সবধরণের অনুভূতিকে প্রকাশ করে। আর ব্যাপারটা যদি হয় প্রবলভাবে লেজ দোলানোর তাহলে এক্ষেত্রে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে এর পেছনে। হতে পারে সে অপরিচিত কিছু দেখে শংকিত (উপরে লেজ উঠিয়ে একটু একটু করে দোলানো), আক্রমণ করতে প্রস্তুত বা আপনাকে কিছু বলতে চায়। তবে তাই বলে এটা নয় যে, সেটা তার খুশিকে প্রকাশ করে না।
কুকুরেরা জড়িয়ে ধরতে খুব পছন্দ করে: খুব অন্যরকম ব্যাপার হলেও সত্যি যে, মানুষের ভেতরে ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরাটাকে একটি ভালো উপায় মনে করা হলেও কুকুরদের ক্ষেত্রে কিন্তু সেটা নয়। তারা সেটাকে কখনো যত্ন, কখনো আধিপত্য, কখনো অস্বস্তিকর বিষয় হিসেবে দেখে। অনেক কুকুর শরীরের ওপরে স্বাভাবিক ভঙ্গীতে হাত রেখে জড়িয়ে ধরলে সেটাকে তারা আধিপত্য বলে মনে করে। কখনো তাদের চোখের ওপর হাত রাখলে তারা ভালো বোধ করে, কখনো নয়। এই পুরোটা অনুভূতি নির্ভর করে কুকুরটির মন-মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গীর ওপরে। তাই জড়িয়ে ধরাকে একটি কুকুর সবসময় ইতিবাচকভাবেই যে নিয়ে থাকে তা কিন্তু নয়।
বিবার্তা/জিয়া