আমাদের অতি পরিচিত একটা আবেগ হলো লজ্জা। তিরস্কারে যেমন লজ্জা পাই আমরা, তেমনই প্রশংসাতেও পাই। পছন্দের মানুষ প্রশংসা করলো আর আপনি লজ্জা পেলেন। এতই লজ্জা পেলেন যে লজ্জায় লাল হয়ে গেলেন। কখনো কি ভেবেছেন লজ্জার রঙ লাল কেন? মানে বলতে চাইছিলাম, লজ্জা পেলে মানুষ অন্য কোন রঙের না হয়ে লালই হয় কেন? এর পেছনেও কিন্তু রয়েছে বিজ্ঞানের যুক্তি।
আমাদের শরীরে নানা ধরনের গ্রন্থি রয়েছে, যা থেকে পরিমাণ মত হরমোন বা গ্রন্থিরস বেরোনোর ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশগুলো ঠিক মত কাজ করে। এমনই এক হরমোনের নাম অ্যাডরিনালিন। লজ্জা বা রাগের সময় শরীরে অ্যাডরিনালিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই হরমোন হৃদপিণ্ডের গতি, রক্তপ্রবাহের গতি এবং রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়।
মজার ব্যাপার হল, এই অ্যাডরিনালিন শরীরের সব জায়গার রক্তনালীকে সংকুচিত করে, কিন্তু কেবলমাত্র মুখের চামড়ার নিচে থাকা রক্তজালিকাগুলোর উপর অ্যাডরিনালিনের কোনো প্রভাব নেই। অন্য রক্তনালীগুলো সংকুচিত হবার সাথে সাথে মুখে রক্তজালিকাগুলোর রক্তপ্রবাহ ও রক্তচাপ বেড়ে যায়।
অর্থাৎ মুখের রক্তজালিকাগুলো গাল, কপাল, থুতনি, ঘাড় এবং কানের কাছে ছড়িয়ে থাকায় ঐসব জায়গায় রক্ত চলাচল একটু বেশি বেড়ে যায়। রক্ত চলাচল বেড়ে যাওয়ার কারণে রক্তের চাপও বেড়ে যায়। এই কারণেই মুখের রঙ লাল বা গোলাপি দেখায়।
বড়দের তুলনায় ছোটদের এবং ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের আবেগ বেশি থাকে বলে, তুলনামূলকভাবে ছোটরা এবং মেয়েরা লজ্জা বা রাগে বেশি লাল হয়।
তাহলে বুঝলেন তো? আমাদের লজ্জা পাওয়ার জন্য কিন্তু কোন মানুষ নয় বরং আমাদের রক্ত আর রক্তের হরমোন দায়ী। অনেকে আবার ভয় পেলেও লাল হয়ে যায়। সেটার কারণও একই।
বিবার্তা/জিয়া