মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব, কারণ মানুষের আছে অতি উন্নত মস্তিষ্ক। এই মস্তিস্ক কে ঘিরে একেবারে বাইরে রয়েছে চুল, যা আমাদের মাথার উপরিভাগের ত্বক আবৃত করে রাখে। চুল নিয়ে যে শুধু মেয়েরাই সচেতন, তা কিন্তু নয়। ছেলেরাও চুল নিয়ে বেশ সচেতন। বিশেষ করে যখন মাথার চুল আস্তে আস্তে কমতে থাকে, তখন সচেতনতা আরও বেড়ে যায়।
এই চুল নিয়ে মানুষের গবেষণার শেষ নেই। মানুষের মাথার চুল কেন সবসময় বাড়তে থাকে, চুল থাকা সত্ত্বেও কেন আমাদের মাথা ঠাণ্ডা থাকে- এরকম হাজারো প্রশ্ন মানুষের মাথায় সবসময় ঘুরে ফিরে আসে। বাচ্চাদের ব্যস্ত রাখার জন্য আমরা অনেক সময় তাদের চুল গুণতে লাগিয়ে দেই।
আসুন আমরা চুল নিয়ে মজার কিছু তথ্য জানি।
● চুল বা লোম হচ্ছে ত্বকের বহিঃস্তরে অবস্থিত ফলিকল থেকে উৎপন্ন হওয়া চিকন লম্বা সুতার মত প্রোটিন তন্তু।
● চুলের প্রধান উপাদান হচ্ছে কেরাটিন। মানুষ ব্যতীত অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণির শরীরে যে নরম, সুন্দর চুল পাওয়া যায় তাকে ‘ফার’ বা লোম বলে।
● ত্বকের উপরিতলের কোষ বা এপিডারমাল সেল থেকে চুলের উৎপত্তি। হেয়ার ফলিকল তৈরি হয় এপিডারমাল সেল থেকে। হেয়ার ফলিকনের একেবারে গভীরতম অংশ বা হেয়ার বালবের বিভাজনে তৈরি হয় নতুন নতুন কোষ। এই নবীন কোষগুলোতে বিশেষ ধরনের প্রোটিন জমতে থাকে, যা ত্বকের সাধারণ প্রোটিন থেকে কিছুটা আলাদা ও শক্ত।
● মানুষের মাথায় আছে অসংখ্য চুল। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মাথায় প্রায় ১,০০,০০০ চুল থাকে। মানুষের চুল প্রতিদিন ০.৫ মিমি বৃদ্ধি পায়।
● ২৪ ঘণ্টায় মাথার চুল সমানভাবে বাড়ে না। রাতে চুল খুব ধীরে বারে। সকালে এর গতি বাড়তে থাকে। বেলা ১০টা-১২টার মধ্যে চুল সবচেয়ে বেশি বাড়ে। দুপুরের দিক এ চুল বাড়ার গতি কমতে থাকে, আবার বিকাল এর দিক আবার বারে এবং সন্ধ্যায় গতি কমতে থাকে।
● গরমকালে চুল সবচেয়ে দ্রুত বাড়ে এবং ঝরে। দৈনিক কিছু চুল স্বাভাবিকভাবে পড়ে যায় এবং একইভাবে কিছু চুল গজায়। কিন্তু চুল পড়া ও চুল গজানোর হারের সমতা যখন থাকে না তখনই চুল পাতলা হতে শুরু করে।
● দিনে প্রায় ১০০টার মত চুল পড়লে তা স্বাভাবিক। অনেক রকম ইনফেকশন, বিভিন্ন রোগ, ওষুধের ব্যবহার এবং খাদ্যের ভিন্নতার কারণে সাধারণত চুল পড়ে।
● ৯৫ ভাগ চুল পড়ার কারণ জিনগত বা বংশগত। এ অবস্থাকে বলা হয় অ্যানড্রোজেনিক অ্যালোপেসিয়া এবং অ্যানড্রোজেন অর্থাৎ পুরুষ হরমোন এ সমস্যার জন্য দায়ী। এ কারণেই ছেলেদের চুল বেশি ঝরে। বৃদ্ধ বয়সে চুল ঝরার হার বেশি।
বিবার্তা/জিয়া