নজর মুহাম্মাদ কাজ করেন পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের পুলিশ বিভাগে। পাকিস্তানে পুলিশিং একটি কুখ্যাত পেশা। এই দেশে পুলিশের আর যা-ই থাকুক, সততার সুনাম নেই।
সেই দেশে সততার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছেন নজর মুহাম্মাদ।
তিনি থাকেন কোয়েটার নাওয়ান কিলি এলাকায়। কোয়েটা শহরের একেবারে প্রান্তে একটি দরিদ্র অঞ্চল। স্ত্রী, তিন পুত্র ও দুই কন্যাকে নিয়ে সংসার। সঙ্গে থাকে এক বোনও। বাড়িভাড়াই দিতে হয় ১০ হাজার রুপি। এভাবে চলে?
নজর মুহাম্মাদ তাই প্রতিদিন আধ ঘণ্টা বাইসাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাওয়া-আসা করেন। একটা মোটরসাইকেল কেনার সামর্থ্যও তার নেই।
নজর মুহাম্মদের কি অফিসের গাড়ি নেই? আছে, আছে। কিন্তু নজর মুহাম্মাদ ব্যক্তিগত, পারিবারিক কিংবা বন্ধুবান্ধবের কাজে অফিসের গাড়ি কখনোই ব্যবহার করেন না। অফিসের গাড়ি কেবল অফিসের কাজেই ব্যবহার করেন তিনি।
১৯৭৪ সালে ১২০ রুপি বেতনে কনস্টেবল পদে পুলিশে ঢুকেছিলেন নজর মুহাম্মাদ। ২০০৬ সালে পদোন্নতি পেয়ে ইন্সপেকটর হন। আগামী বছর তার অবসরে যাওয়ার কথা।
প্রতিদিন সন্ধ্যায় কোয়েটা নগরীর আচা খান চক ও অন্যান্য স্থানে সরকারি নাম্বারপ্লেট লাগানো কত বিলাসবহুল গাড়িই না দেখা যায়! এরই মাঝে নজর মুহাম্মাদ চলেন তার পুরনো বাইসাইকেল নিয়ে। চাকরি শুরু করেছিলেন বাইসাইকেল নিয়ে, অবসরেও যাবেন তাই নিয়ে। তাতে দুঃখ কিছু নেই তার। বস্তুগত লাভের চাইতে সৎ হয়ে বাঁচা তার কাছে অনেক জরুরী।
(নজর মুহাম্মদ হয়তো লোকচক্ষুর আড়ালেই থেকে যেতেন চিরকাল, কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় তার সাইকেলে চড়া ছবি ভাইরাল হয়ে তিনি চলে আসেন একেবারে পাদপ্রদীপের নিচে।) সূত্র : ডন
বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী