দিন দিন প্রয়োজন বাড়তে থাকলে চালু হলো বিনিময় প্রথা। তখনও অর্থের বিনিময়ে কোনোকিছু বেচাকেনার ব্যবস্থা চালু হয়নি। বিনিময় প্রথায় এক পণ্যের বিনিময়ে অন্য পণ্য দেয়া-নেয়া হতো। কিন্তু এক পর্যায়ে, বিনিময় প্রথায় সমতা না থাকায় অর্থ ব্যবস্থা চালু হলো। এলো মুদ্রা।
মূলত, রোমানরা এ মুদ্রা বা টাকার ধারণার প্রবর্তন করে। সেটা প্রায় দুই হাজার বছর আগের কথা। শুরুতে কেবল ধাতব মুদ্রা চালু ছিল। তার অনেক পরে এলো কাগজের নোট। এখন বাড়ছে ডেবিট আর ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন। এই অর্থ আর অর্থনীতির চলার পথে ঘটেছে কিছু মজার ঘটনা। জেনে নেয়া যাক!
● এখন থেকে সাড়ে চার হাজার বছরেরও আগে মিশরে বিনিময় প্রথার প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায়।
● অতীতে মানুষ অনেক কিছুই টাকা হিসেবে ব্যবহার করেছে। লবণ, কফি বিন, শস্যদানা, গরু ও হাঙরের দাঁত, মূল্যবান পাথরও বাদ যায়নি।
● প্রথম মুদ্রার প্রচলন করেন লিডিয়ার (বর্তমানে তুরস্কের অংশ) রাজা। তিনি ছিলেন একজন ধনকুবের।
● বিশ্বের ক্ষুদ্রতম মুদ্রার প্রচলন ছিল নেপালে। যার ওজন মোটে ০.০০২ গ্রাম।
● বিশ্বের সবচেয়ে ভারী মুদ্রার প্রচলন ছিল সুইডেনে। এর ওজন ছিল প্রায় ২০ কেজি।
● মুদ্রার উপর ছাপানো অনেক লেখাই মূলত এক ধরনের কোড। জায়গার অভাবে সংক্ষেপে লেখা হয়।
● অতীতে বেশির ভাগ মুদ্রার প্রান্ত খাঁজ কাটা থাকতো। কারণ, অসাধু ব্যবসায়ীরা মুদ্রার প্রান্ত কেটে মূল্যবান ধাতু বের করে ফেলতো। এটি প্রতিরোধ করার জন্যে অনেক দেশের মুদ্রার প্রান্তে বিভিন্ন ছবি অথবা লেখা থাকতো।
● ব্যাংকনোট তৈরি করা হয় বিশেষ ধরনের কাগজে। আলোর কাছে ধরলে এ ধরনের কাগজের জলছাপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
● ব্যাংকনোটের ভেতর এক ধরনের নিরাপত্তা সুতা থাকে, যেনো সহজেই কেউ নোট জাল করতে না পারে।
● বিশ্বের ক্ষুদ্রতম নোট ছেপেছে মরক্কো। নোটটি একটি ডাকটিকিটের সমান।
● ভারত সরকারের উদ্দেশ্যে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত লিখেছেন একশো ২৭ কোটি ৯১ লাখ ৮৭ হাজার চারশো ৯০ ডলারের চেক। এটিই বিশ্বের বৃহত্তম চেক।
● পৃথিবীর সব মানুষের জন্যে এক বছরের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে যে পরিমাণ অর্থ লাগবে, তা মাত্র দুই সপ্তাহে অস্ত্রের পেছনে ব্যয়কৃত অর্থের সমান!
● ১৪ শতকে বৃহত্তম ব্যাংক নোটটি ছেপেছে চীন। যার পরিমাপ ৯ বাই ১৩ ইঞ্চি।
● গুটিবসন্ত নির্মূল করতে ১০ বছরব্যাপী সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছে তা অস্ত্রের পেছনে তিন ঘণ্টারও কম সময়ে ব্যয় করা অর্থের সমান।
● পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতি হয় ১৯৪৬ সালের জুনে, হাঙ্গেরিতে। তখন এক হাজার নয়শো ৩১ স্বর্ণ পেঙ্গোর মূল্য হয়েছিল ১৩০ মিলিয়ন ট্রিলিয়ন পেঙ্গো নোটের (হাঙ্গেরিয়ান টাকা) সমমূল্য।
● অতীতে মানুষ অনেক কিছুর উপরেই ব্যাংক চেক লিখতো। পাথর, কলার খোসা, গরুর চামড়া ইত্যাদি।
● মূলত বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ওপর কড়া নজরদারির উদ্দেশ্যে প্রায় সব দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রয়েছে।
বিবার্তা/জিয়া