কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে রেকর্ড গড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। এখানে আগস্ট মাসে দুই লাখ চৌদ্দ হাজার টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়। এর আগে এক মাসে এত সংখ্যক কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করেনি চট্টগ্রাম বন্দর।
চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য মোহাম্মদ জাফর আলম বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি গতিশীল। ভবিষ্যতের চাহিদাও বন্দর যথেষ্ট দায়িত্বশীলতার সাথে মোকাবেলা করবে। বন্দরের সক্ষমতা বিশ্বমানে উন্নীত করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বন্দরের কর্মকর্তারা বলেন, বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য ও কন্টেনারের ব্যবহার আগের তুলনায় বেড়েছে। একসময় মূল্যবান পণ্য কন্টেইনারে আনা হলেও এখন চালডালও আনা হচ্ছে। কন্টেইনারের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বন্দরের ওপর চাপও বাড়ছে। ছয় টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের মধ্য দিয়ে ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম বন্দর যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে বিশেষজ্ঞদের হিসেবের চেয়েও বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেদের কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল। কন্টেইনার হ্যান্ডলিংসহ বন্দর বিষয়ে বিশ্বের খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান হামবুর্গ পোর্টের বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পরিচালিত এই সার্ভে প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০১৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে ১৯ দশমিক ৫৬ লাখ টিইইউএস কন্টেইনার এবং ৪২ দশমিক ৪৭ মেট্রিকটন খোলা পণ্য (জেনারেল কার্গো) হ্যান্ডলিং করবে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের ওই প্রতিবেদন ভুল প্রমাণিত করে বন্দর কর্তৃপক্ষ ২০১৫ সালে অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে ২০ লাখ ২৫ হাজার টিইইউএস কন্টেইনার এবং পাঁচ কোটি ১৩ লাখ ৮০ হাজার টন খোলা পণ্য হ্যান্ডলিং করে ইতিহাস সৃষ্টি করে।
নির্ধারিত সময়ের এক বছর আগেই বিশ লাখ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিংকারী বন্দর হিসেবে বিশ্বের শিপিং সেক্টরে নতুন ইমেজ সৃষ্টি করেছিল চট্টগ্রাম বন্দর। চলতি বছর হ্যান্ডলিং করে ২১ লাখ ৮৯ হাজার ৪৩৯ টিইইউএস কন্টেইনার। ২০২০ সালে ২৯ লাখ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করবে বলে বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট রয়েছে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের রিপোর্টের চেয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষকে বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করতে হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মন্তব্য করেছেন।
গত মাসে বন্দর কর্তৃপক্ষ ২ লাখ ১৪ হাজার টিইউইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করেছে। এর আগে কর্তৃপক্ষ এক মাসে এত বিপুল সংখ্যক কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করেনি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ধারা অব্যাহত থাকলে বন্দরের প্রবৃদ্ধি সতের শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে এবং আগামী তিন বছরের মধ্যে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ ছাড়িয়ে যাবে ৩০ লাখ টিইইউএস। বিপুল সংখ্যক কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করতে বন্দরকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেশ কিছু জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মন্তব্য করেছেন।
বিবার্তা/জিয়া