দু’ একটি পণ্যের দামের স্বাভাবিক পরিবর্তন ছাড়া চলতি সপ্তাহেও পণ্যবাজারে দামের তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে স্থান ও বাজারভেদে পণ্যের দামের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। শুক্রবার সকালে রাজধানীর কাওরান বাজার, শ্যামপুর বাজার, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার, রামপুরা কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে গিয়ে ও খোঁজ নেয়ার পর বাজারের এই চিত্র উঠে এসেছে।
চলতি সপ্তাহে চালের বাজারে উল্লেখযোগ্য কোনো পার্থক্য দেখা যায়নি। এ সপ্তাহে মানভেদে মিনিকেট চাল কেজি প্রতি ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা, নাজিরশাহ ৪২ থেকে ৪৮, পাইজাম ৩৮ থেকে ৪৫, সাধারণ মোটা চাল ৩০ থেকে ৩৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পোলাওয়ের চাল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা দরে।
আগের সপ্তাহের মত এবারও প্রায় একই দামে বিক্রি হচ্ছে ডাল জাতীয় পণ্য। দেশি মসুরের ডাল ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকা, তুরস্ক ও কানাডার বড় দানার মসুরের ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, তুরস্ক ও কানাডার মাঝারি দানার মসুরের ডাল ১১০ থেকে ১২০, অস্ট্রেলিয়ার ছোট দানার মসুর ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মুগ ডাল মানভেদে ১০০ থেকে ১১০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে।
আগের সপ্তাহের তুলনায় চিনির দাম কিছুটা কমেছে। চিনি বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৬২ থেকে ৬৬ টাকা, যা গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিপ্রতি ৩ থেকে ৫ টাকা হারে কমেছে। এছাড়া লবণ প্যাকেট মানভেদে প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩৮ টাকা, সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ৮২ থেকে ৮৫ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন তেল ৯৪ থেকে ৯৮ টাকা, লুজ পামওয়েল ৬৮ থেকে ৭০, পামওয়েল সুপার ৭২ থেকে ৭৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে আটা ২৮ থেকে ৩৪ টাকা ও ময়দা ৩৪ থেকে ৪২ টাকা দরে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির ডিম হালি প্রতি ৩২ থেকে ৩৪ ও হাসের ডিম ৩৮ থেকে ৪২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গুড়া দুধ ডানো ৫৫০ থেকে ৫৭০, ডিপ্লোমা ৫৪০ থেকে ৫৬০, ফ্রেশ ৪২০ থেকে ৪৫০, মার্কস ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মসলার দাম গত সপ্তাহের তুলনায় আরও কিছুটা কমেছে। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৩২ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৪ টাকা কেজি দরে। যা গত সপ্তাহের তুলনায় ২ থেকে ৪ টাকা হারে দাম কমেছে। একইভাবে ভারতীয় রসুন ১৬০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা, দেশি রসুন ১৪০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহের তুলনায় ৭ থেকে ১০ টাকা হারে কম। আদা মানভেদে ৬০ থেকে ৯০ টাকা কেজিপ্রতি পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কমেছে।
তাছাড়া মানভেদে হলুদ ১৪০ থেকে ১৮০, শুকনা মরিচ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, জিরা ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকা, দারুচিনি ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, লবঙ্গ ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা, এলাচ ১১০০ থেকে ১৬০০ টাকা, ধনে ১২০ থেকে ১৫০, তেজপাতা ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দাম আগের মতোই রয়েছে। এ সপ্তাহে কাচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। যা গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে। তাছাড়া আলু ২০ থেকে ২২, মিষ্টি কুমড়া পিসপ্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা, মাঝারি সাইজের ফুলকপি প্রতি পিস ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচাকলা হালিপ্রতি ১৮ থেকে ২২ টাকা, বেগুন ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা, পটল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ঝিঙ্গা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, চিচিংগা ৩৫ থেকে ৪০, ঝিঙে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া লেবুর হালি ২০ থেকে ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে মাছের দামও কমেছে। রুই মাছ কেজি প্রতি ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ও নাইলোটিকা ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, কাতলা ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙ্গাস ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, ফার্মের কই মাছ কেজি প্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, শিং মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি প্রকারভেদে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এ সপ্তাহে এক কেজি ওজনের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকায়। এছাড়া চারশ থেকে ছয়শ গ্রামের প্রতিপিছ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়।
মাংসের বাজারে তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। তবে বয়লার মুরগির দাম সামান্য কমেছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা, লেয়ার ২০০ থেকে ২২০টাকা, দেশি মুরগি ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকা, গরুর মাংস কেজি প্রতি ৪০০ থেকে ৪৩০ টাকা, খাসির মাংস ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী মাংসের সর্বোচ্চ দাম গরুর ৪২০, খাসির ৫৭০ ও ভেড়ার ৪৭০ টাকা নির্ধারণ করেছে।
বিবার্তা/ওরিন/জিয়া