ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়া কিনতে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার বাণিজ্যিক ব্যাংক ৬১০ কোটি টাকা ঋণ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধরাণ করেছে। ইতোমধ্যে এ খাতে ৩৬০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ঋণের বাকি অর্থ ঈদের পর বিতরণ করা হবে।
কোরবানির পশুর চামড়া কেনার জন্য বিশেষ এই ঋণ গত মঙ্গলবার বিতরণ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার ছিল ঈদের আগে শেষ ব্যাংকিং কর্মদিবস।
দেশে চামড়ার বড় সরবরাহ আসে কোরবানির ঈদে। এ ঈদেই বেশি চামড়া সংগ্রহ করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। এ কারণে প্রতিবছর এ খাতে ব্যবসায়ীদের বিশেষ ঋণ দেয়ার উদ্যোগও থাকে ব্যাংকগুলোর। যেসব ব্যবসায়ী গত কোরবানিতে নেয়া ঋণ পরিশোধ করেছেন, সেসব গ্রাহক এবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঋণ পাচ্ছেন।
বরাবরের মত এবারো চামড়া কেনায় সবচেয়ে বেশি ঋণ দেবে জনতা ব্যাংক। ব্যাংকটি চামড়া কিনতে ২০ ব্যবসায়ীকে ২৫০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে।
এ খাতে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রুপালী ব্যাংক ১৬০, অগ্রণী ১৩০ এবং সোনালী ব্যাংক ৭০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
এ প্রসঙ্গে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান জানান, এবার তারা নিয়মিত গ্রাহকদের ১৬০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছেন। তবে আগে নেয়া ঋণ যারা পরিশোধ করেছেন, তারাই এবার ঋণ পাচ্ছেন।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে ঋণের বড় একটি অংশ বিতরণ করা হয়েছে। বাকিটা ঈদের পর বিতরণ করা হবে।
সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করেছে কেবলমাত্র এমন গ্রাহককে এবার ৭০ কোটি টাকার ঋণ দিচ্ছি।
বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিএফএলএলএফইএ) সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতিবছর ঈদুল আজহা উপলক্ষে চামড়া খাতে ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দেয়া হয়। এবারো ৬০০ কোটি টাকার ওপরে ঋণ পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করলে ব্যাংকগুলো এ খাতে আরো বেশি ঋণ প্রদানে আগ্রহী হতো। এ খাতে সরকারি ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোকেও ঋণ প্রদানে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
বাংলাদেশ ট্যানারি এসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো গত তিনদিনে চামড়া খাতে ৩৬০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। ঈদের পর ঋণের বাকি অর্থ ব্যবসায়ীরা পাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, চামড়া খাতে দেয়া এবারের ঋণের সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ থেকে ১২ শতাংশ। এটি একটি রফতাতিমুখী শিল্প, সেই হিসেবে এর সুদহার আরো কমানোর প্রয়োজন।
বিবার্তা/রোকন/কাফী