ময়মনসিংহ শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে এনায়েতপুর ইউনিয়নের দুলমা গ্রামে সফলভাবে চাষা হচ্ছে থাইল্যান্ডের অর্কিড। সপুষ্পক প্রজাতির পরিবারভুক্ত অর্কিড মূলত রঙিন, সুগন্ধি আর বহুলবিস্তৃত। অধিকাংশই পরাশ্রয়ী হলেও, আছে ভূমিজীবী মৃতজীবীও। সৌন্দর্যের সম্ভার এই অর্কিড ফুলবাড়ীয়ায় চাষাবাদ হচ্ছে।
প্রথমে ৭ একর জমি নিয়ে অর্কিডের চাষাবাদ শুরু করলেও এখন জমির পরিমাণ ২৫ একর। দীপ্ত অর্কিড লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ২০০১ সাল থেকে বাগানে অর্কিডের চাষাবাদ শুরু করে।
এখানে চাষ করা ২০টি জাতের মধ্যে অনসিডিয়াম, ভ্যান্ডা, ক্যাটোলিয়া, ডেনড্রোবিয়াম ও মোকারা উল্লেখযোগ্য। এখানে অর্কিডের চাষ পদ্ধতির পরিকল্পনা নেন ইঞ্জিনিয়ার ইতিমাতউদৌল্লাহ নামে এক ব্যক্তি যিনি একসময় থাইল্যান্ডে চাকরি করতেন। তখন তিনি দেখেন, সে দেশটিকে অর্কিড চাষাবাদের মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে। মূলত তখন থেকেই তিনি এদেশে অর্কিড চাষ করার পরিকল্পনা নেন। অবশেষে তিনি ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়াকে অর্কিড চাষের উপযুক্ত জমি বলে মনে করেন।
শুরুতে ৭ একর জমিতে ২ লাখ চারা রোপনের মাধ্যমে বছর তিনেক থাই প্রযুক্তিতে চাষাবাদ করেন। সেই দেশ থেকে কিনে আনেন চারা, কীটনাশক, সার ও অন্যান্য উপকরণ। বিদেশ থেকে আমদানির ফলে ব্যায়ের মাত্রা বেড়ে যেত। যদিও এখন আর কিছুই তাকে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয় না। সমৃদ্ধ আজ তার বাগান। ২০ জাতের মধ্যে অনেক গাছের প্রতিটি থেকে ৩ থেকে ৪ বছর পর্যন্ত ফলন পাচ্ছেন। বর্ষা মৌসুমে বাম্পার ফলন হয় অর্কিডের। প্রতি মাসে ৩০-৪০ হাজার টাকার স্টিক বিক্রি হয়ে থাকে।
এই বাগানের সাফল্য দেখে ২০১৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশে নিযুক্ত আমেরিকান রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা পরিদর্শন করেন বাগানটি। এছাড়াও প্রতিদিনই এই বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন প্রচুর দর্শনার্থী। বাগানটিকে ঘিরে বাড়ছে পর্যটকদেরও আনাগোনা।
বাগানের ব্যবস্থাপক কৃষিবিদ কাজী শরীফউদ্দিন মাহামুদ বলেন, শুধু অর্কিড বিক্রিই মূল লক্ষ্য নয়, ছোট ছোট বাগান করতে আগ্রহীদের চারা বিক্রি ও চাষাবাদের কলাকৌশলে শিখিয়ে সহযোগিতা করে থাকি আমরা। আর অর্কিডের বাণিজ্যিক চাষ করে আমরা লাভবান।
বিবার্তা/আনোয়ার/প্লাবন