চলতি সপ্তাহেও স্থিতিশীল রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার। দু’একটি পণ্যের দামের পরিবর্তন ছাড়া তেমন কোনো পার্থক্য আসেনি। তবে স্থান ও বাজারভেদে পণ্যের দামের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। শুক্রবার সকালে রাজধানীর নিউমার্কেট কাঁচাবাজার, কাওরান বাজার, শ্যামপুর বাজার, রামপুরা কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে গিয়ে খোঁজ নেয়ার পর বাজারের এই চিত্র উঠে এসেছে।
এ সপ্তাহে বাজারের প্রধান আকর্ষণ মাছের রাজা ইলিশ। রাজধানীর বাজারে ব্যপকভাবে আসতে শুরু করেছে মৌসুমের রূপালি ইলিশ। সরবরাহের পরিমাণ বেশি হওয়ায় দাম কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। এ সপ্তাহে এক কেজি ওজনের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকায়, যা ঈদের আগে ১৫শ’ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা ছিল। এছাড়া চারশ থেকে ছয়শ গ্রামের একহালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে ১ ২শ’ টাকায়।
বিক্রেতারা বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর অনেক বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে। সরকারের কঠোর পদক্ষেপ এবং আল্লাহর রহমতের কারণেই ইলিশ বেশি ধরা পড়ছে। জেলেদের আর্থিক সহায়তাসহ সরকারের বিভিন্ন শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ডের ফলে জাটকা ধরা হচ্ছে না। এ কারণে ইলিশও বেশি পাওয়া যাচ্ছে এবং আকারেও বড় হচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে চালের বাজারে তেমন কোনো পার্থক্য দেখা যায়নি। মিনিকেট চাল কেজি প্রতি ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা, নাজিরশাইল ৪২ থেকে ৪৮, পাইজাম ৩৮ থেকে ৪৫, সাধারণ মোটা চাল ৩০ থেকে ৩৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পোলাওয়ের চাল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা দরে।
এ সপ্তাহেও প্রায় একই দামে বিক্রি হচ্ছে ডাল জাতীয় পণ্য। দেশী মসুরের ডাল ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকা, আমদানিকৃত তুরস্ক ও কানাডার বড় দানার মসুরের ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, তুরস্ক ও কানাডার মাঝারি দানার মসুরের ডাল ১১০ থেকে ১২০, অস্ট্রেলিয়ার ছোট দানার মসুর ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মুগ ডাল মানভেদে ১০০ থেকে ১১০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে চিনি বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, লবণ প্যাকেট মানভেদে প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩৮ টাকা, সয়াবিন তেল ৮২ থেকে ৮৫ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন তেল ৯৪ থেকে ৯৮ টাকা, লুজ পামওয়েল ৬৮ থেকে ৭০, পামওয়েল সুপার ৭২ থেকে ৭৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মানভেদে আটা ২৫ থেকে ৩৪ টাকা ও ময়দা ৩৪ থেকে ৪২ টাকা দরে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির ডিম হালি প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা ও হাঁসের ডিম ৩৮ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গুড়া দুধ ডানো ৫৫০ থেকে ৫৭০, ডিপ্লোমা ৫৪০ থেকে ৫৬০, ফ্রেশ ৪২০ থেকে ৪৫০, মার্কস ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে মসলার দাম কিছুটা কমেছে। দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে। ভারতীয় রসুন ১৭০ টাকা থেকে ১৯০ টাকা, দেশী রসুন ১৫০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা, আদা মানভেদে ৬০ থেকে ১০০ টাকা কেজিপ্রতি পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়া হলুদ ১৫০ থেকে ২০০, শুকনা মরিচ ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, জিরা ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকা, দারুচিনি ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, লবঙ্গ ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা, এলাচ ১১০০ থেকে ১৬০০ টাকা, ধনে ১২০ থেকে ১৫০, তেজপাতা ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দাম আগের মতোই রয়েছে। তবে কাঁচামরিচের দাম আকাশ ছোয়া। এ সপ্তাহে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টকায়। আলু ২২ থেকে ২৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা, মাঝারি সাইজের ফুলকপি প্রতি পিস ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচাকলা হালিপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, বেগুন ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, পটল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, চিচিংগা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ঝিঙে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া লেবুর হালি ২০ থেকে ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে মাছের দামও কমেছে। মাছের মধ্যে রুই মাছ কেজি প্রতি ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, কাতলা ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙ্গাস ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, ফার্মের কৈ মাছ কেজি প্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, শিং মাছ ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি প্রকারভেদে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে মাংসের বাজারেরও দাম কমতে দেখা গেছে। ব্রয়লার মুরগী বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩৫ টাকা, গরুর মাংস কেজি প্রতি ৪০০ থেকে ৪৩০ টাকা, খাসির মাংস ৫৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, লেয়ার ২০০ থেকে ২২০ টাকা, দেশী মুরগি ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বিবার্তা/ওরিন/নিশি
