আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। শীর্ষ উত্তোলক দেশগুলো উত্তোলনসীমা আরোপে ঐকমত্যে পৌঁছবে এমন প্রত্যাশায় সপ্তাহের প্রথম দিনেই ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে পণ্যটির দাম। খবর মার্কেটওয়াচের।
নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডবিস্নউটিআই) দর ব্যারেলে শূন্য দশমিক ৬৭ ডলার বেড়েছে। নভেম্বরে সরবরাহের চুক্তিতে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে এদিন প্রতি ব্যারেল ডবিস্নউটিআই বিক্রি হয়েছে ৪৪ দশমিক ৭৮ ডলারে।
অন্যদিকে লন্ডনের ইন্টারকন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জে (আইসিই) আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্ট অয়েলের দাম ব্যারেলে শূন্য দশমিক ৩১ ডলার বেড়েছে। মঙ্গলবার নভেম্বরে সরবরাহের চুক্তিতে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট অয়েল ৪৬ দশমিক ২৩ ডলারে বিক্রি হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ৪ শতাংশ কমেছিল। অন্যতম শীর্ষ উত্তোলক দেশ সৌদি আরব অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজভুক্ত (ওপেক) ও ওপেকবহির্ভূত দেশগুলোর বৈঠকে পণ্যটিতে উত্তোলনসীমা আরোপের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে পারে এমন খবরে দাম পড়ে যায় পণ্যটির। তবে রাশিয়া এ সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন দেবে বলে জানিয়েছে।
গত সপ্তাহজুড়ে ওপেক সদস্য দেশগুলো নানা ধরনের বক্তব্য দিয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, বৈঠকে জ্বালানি তেলের উত্তোলনসীমা আরোপের পক্ষেই সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
এ সম্পর্কে ওপিনিয়ন এক্সপ্রেসের বিশ্লেষক বেন লি বার্ন বলেন, ‘কখনও মনে হচ্ছে জ্বালানি তেল উত্তোলনে নির্দিষ্ট সীমা আরোপিত হতে পারে। আবার কখনও এর উল্টোটা মনে হচ্ছে। তবে পণ্যটির উত্তোলনে সীমা আরোপিত হবে কিনা, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ আমাদের হাতে নেই।’
আলজেরিয়ার তেলমন্ত্রী নৌরেদ্দিনে বউটেরফা বলেছেন, ‘এ বৈঠকে উত্তোলনসীমা আরোপের পক্ষে আলোচনা হতে পারে।’ তিনি এ বৈঠক থেকে উত্তোলনসীমা আরোপের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান আসতে পারে বলে মনে করছেন।
দুই বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ১০০ ডলারের নিচে অবরুদ্ধ হয়ে আছে। অধিক সরবরাহ এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে জ্বালানি তেলের দাম আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে উত্তোলনসীমা আরোপ নিয়ে কথাবার্তা চলছে।
কয়েকটি দেশ উত্তোলনসীমা আরোপের পক্ষে রয়েছে, আবার কেউ কেউ-এর বিরোধিতা করছে। মঙ্গলবার থেকে আলজেরিয়ায় শীর্ষ তেল উত্তোলক দেশগুলো এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বসেছে। আজ বুধবার শেষ হতে যাওয়া এ বৈঠকেই বিষয়টির সুরাহা হতে পারে।
মঙ্গলবার নিমেক্সে বেড়েছে গ্যাসোলিন ও ডিজেলের দাম। অন্যদিকে লন্ডন আইসিইতে কমেছে গ্যাসোলিনের দাম। নিমেক্সে অক্টোবরে সরবরাহের জন্য প্রতি গ্যালন গ্যাসোলিন বিক্রি হয়েছে ১ দশমিক ৩৮৫৯ ডলারে। আর অক্টোবরে সরবরাহের চুক্তিতে প্রতি গ্যালন ডিজেল বিক্রি হয়েছে ১ দশমিক ৪১৭৯ ডলারে। এছাড়া লন্ডন আইসিইতে অক্টোবরে সরবরাহের চুক্তিতে প্রতি টন গ্যাসোলিন বিক্রি হয়েছে ৪১৬ দশমিক ২৫ ডলারে, যা আগের দিনের (শুক্রবার) চেয়ে ৯ দশমিক ২৫ ডলার কম।
বিবার্তা/জিয়া