বাচ্চা বয়সে কত না বদ অভ্যাস থাকে। পেট ভরা থাকলেও হাতের একটা বা দুটো আঙুল মুখে দিয়ে চুষতে থাকে। তাকে বার বার বাধা দেয়া সত্বেও একই কাজ করে চলে। এতে অনেক সময় নখের ময়লা পেটে গিয়ে নানা ধরনের অসুখ হয়, নখ নষ্ট হয়ে যায়, আঙুল চিকন হয়ে যায় আবার আঙুল বেশি সময় ভিজে থেকে ঘা পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। বেশ বড় হয়ে গেলেও অনেকের এই অভ্যাসটা থেকে যায়।
বাচ্চাদের এই ধরনের সমস্যা সাধারণত অলসতা এবং বিষণ্ণতার কারণে হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানসিক ভারসাম্যের অভাবে এই অভ্যাস দেখা দেয়। তাই দেরি না করে বাচ্চাদের এই অভ্যাস দূর করা উচিৎ।
সেজন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন-
আঙুল তিতা করে দিন: আঙুল খাওয়া বন্ধ করার খুব সহজ এবং কার্যকরী উপায় হচ্ছে নিম পাতার রস বা করলার রস অথবা লেবুর রস বাচ্চাদের আঙ্গুলে মাখিয়ে দেয়া। আঙুল মুখে দিলেই যখন তিতা লাগবে তখন তার প্রচেষ্টা থামাবে। বাচ্চা ঘুমিয়ে গেলে এই কাজটি করতে পারেন। ঘুম ভেঙে তার ধারণা হবে আঙুলই তিতা হয়ে গেছে। তখন আর আঙুল ধুয়ে দিতে বলবে না। এই পদ্ধতিটি শুধু মাত্র দুই বছরের নিচের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই এই কাজ করুন দেখবেন এই বদ অভ্যাস দূর হয়ে গেছে।
বাচ্চাকে বোঝান: আঙুল খাওয়ার অভ্যাস পাঁচ বছরের পরেও থাকলে তাকে বুঝিয়ে বলুন। আঙুল খাওয়া যে একটি খারাপ ব্যাপার তা নিয়ে কথা বলুন। বকাঝকা না করে ভালোভাবে বুঝিয়ে বললে সমস্যা দূর হবে।
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ান: ক্যালসিয়ামের অভাবেও অনেক সময় এই বাজে অভ্যাস তৈরি হয়। তাই খাবার তালিকায় ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার যোগ করুন। সবুজ শাকসবজি, দুগ্ধজাতীয় খাবার, বিভিন্ন ধরনের বাদাম খুব ভালো খাবার যার মধ্যে রয়েছে অধিক পরিমানে ক্যালসিয়াম।
বাচ্চাকে ব্যস্ত রাখুন: যখনি দেখবেন আপনার বাচ্চা আঙুল খাচ্ছে তখন চেচামেচি না করে তাদের একটি খেলায় মাতিয়ে দিন। এমন একটি খেলা যেখানে দুটি হাতের স্পর্শ অনেক বেশি। যেমন টয় দিয়ে বিল্ডিং তৈরি করা, মালকড়ি খেলা, ডল হাউস সাজানো, গাড়ি সাজানো ইত্যাদি। এমন কিছু খেলায় বা কাজে মাতিয়ে দিন যেন তাদের দুটি হাত ব্যাস্ত থাকে। অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন তারা দীর্ঘক্ষণ সময় ধরে খেলায় মগ্ন থাকে।
কারণ খুঁজে বের করুন: বাচ্চা কেন আঙুল খাচ্ছে তার কারণ খুঁজে বের করুন। বিষণ্ণতা, মানসিক চাপ অথবা বিশেষ কোন পরিস্থিতি আপনার বাচ্চাকে আঙুল খাওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে পারে। এমনকি ভয় থেকেও এই সমস্যা হতে পারে। অনুসন্ধান করুন, খুঁজে বের করুন তাহলে আপনি সঠিক সমাধান দিতে পারবেন যাতে আপনার বাচ্চা অনেক আত্নবিশ্বাসি এবং পরিপক্ক হয়ে উঠতে পারে। তাছাড়া মুখে আঙুল দেখলেই সাবধান করুন। দেখবেন অভ্যাস পাল্টে গেছে।
বিবার্তা/জিয়া