স্বল্পমূল্যে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা না গেলে দরিদ্র মানুষ যথাযথ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হবেন, বাধাগ্রস্ত হবে দেশের উন্নয়নও।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রগ্রেসিভ ডক্টরস ইউনিয়নের (পিডিইউ) উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘স্বল্পমূল্যে স্বাস্থ্যসেবা: প্রেক্ষাপট ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, এমপি। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সভাপতিত্ব করেন পিডিইউয়ের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার।
সভাপতির বক্তব্যে শহীদুল্লাহ সিকদার বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা উত্তর সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষে কর্মসূচী দিয়ে ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতাবিরোধীদের অপকর্মের জন্যে সে কর্মসূচী বাস্তবায়ন হয়নি। উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা স্বল্পমূল্যে নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসক, নার্স, প্যারামেডিকসহ রোগী ও সকল শ্রেণী পেশার মানুষের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বিভিন্ন হেলথ সার্ভিস রয়েছে যারা গরিব সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে। বাংলাদেশেও এরকম সেবার মাধ্যমে দরিদ্রের মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা যেতে পারে।
সেমিনারে অন্য বক্তারা বলেন, পৃথিবীতে প্রায় ১০০ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। এর মধ্যে ১০ কোটি মানুষ এর খরচ মেটাতে না পেরে গরিব হয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ের এক গবেষণা অনুয়ায়ী, দেশে যে কোনো পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের সময় ৬৪ শতাংশ খরচই ব্যবহারকারী নিজেদেরকেই করতে হয়। বাংলাদেশ প্রতি বছর শুধু অসুস্থতার কারণে প্রায় ৫৭ লাখ মানুষ দারিদ্রের শিকার হচ্ছেন। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে মোট বাজেটের পরিমাণ ৩,৪০,৬০৫ কোটি টাকা। সেখানে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ হচ্ছে ১৭,৪৮৭ কোটি। যা গত বছরের তুলনায় সামান্য বেশী; তবু জনসংখ্যা এবং প্রয়োজন অনুপাতে আশাব্যঞ্জক নয়।
বক্তারা উল্লেখ করেন, স্বাস্থ্যসেবার মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রকল্প। বর্তমানে দেশে মোট ১২,৫২৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক আছে। এ প্রকল্পের সুফল ভোগ করছেন দেশের সাধারণ মানুষ। তারা বাড়ির পাশেই বিনামূল্যে পাচ্ছেন স্বাস্থ্যসেবা। প্রতি মাসে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ লাখ মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা নেন। এসব ক্লিনিকগুলো চালু হওয়ার পর থেকে এগুলোর মাধ্যমে মোট ১৭ কোটির বেশি রোগী সেবা পেয়েছেন।
বিবার্তা/মৌসুমী