আমরা যখন ফল কিনতে বাজারে যাই তখন মনে একটাই প্রশ্ন জাগে, ফলটি কি ফরমালিনমুক্ত? এই সংশয়ে আমরা অনেকেই ফল খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতে চাই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মানব শরীরের জন্য ফরমালিনের গ্রহণযোগ্য মাত্রা নির্ধারণ করেছে শূন্য দশমিক ১৫ পিপিএম। অথচ ডিএমপি, বিএসটিআই ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর সহনীয় মাত্রা বানিয়ে নিয়েছে ২ পিপিএম। যা আন্তর্জাতিক মানের চেয়ে প্রায় ১৪ গুণ বেশি!
খাদ্যে ফরমালিনবিরোধী অভিযানে নিরাপদ খাদ্য আইনের (২০১৩) ২৩ ধারাকে ব্যবহার করা হয়। এতে উল্লেখ আছে, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য (যেমন— ক্যালসিয়াম কার্বাইড, ফরমালিন, সোডিয়াম সাইক্লামেট), কীটনাশক (ডিডিটি, পিসিবি তেল) বা অন্য কোনো বিষাক্ত দ্রব্য মিশ্রিত খাদ্যদ্রব্য মজুদ, বিপণন বা বিক্রি করা যাবে না।
সংশয় আর আতঙ্ক থেকে মুক্ত করতে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের (বিএসটিআই) পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে বিভিন্ন ফলের নমুনায় ক্ষতিকর মাত্রায় ফরমালিন পাওয়া যায়নি। আর এই প্রতিষ্ঠানটি মৌসুমি ফলের ওপর পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ চালায়।
পরীক্ষায় তারা ধারণা করে আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, তরমুজ, লেবু, পেঁপে, আনারস, পেয়ারা, জামরুল, বেল, কতবেল ও ডেউয়া ইত্যাদি মৌসুমি ফলের মধ্যে ফরমালিন মেশানো যায় না। তবে আমের মধ্যে মেশানো গেলেও তা খুব অল্প পরিমাণে মেশানো যায়। আর তা যদি খাওয়ার আগে পানিতে ভালভাবে ধুয়ে নেয়া যায় তাহলে আর কোনো ভয় থাকে না।
জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ফুড সেফটি ল্যাবরেটরিতে ২৭টি ফলের নমুনা পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে ১৬টি নমুনা আমের, ৬টি লিচুর ও কলা, খেজুর, আঙুর, আপেল ও মাল্টার একটি করে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এসব নমুনায় ফরমালডিহাইডের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির পরীক্ষক পান্না ওয়াহেদের ভাষ্য, ফরমালিনের ভয়ে মৌসুমি ফল খাওয়া বাদ দেয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ পরীক্ষায় মাত্রার চেয়ে বেশি ফরমালিন ধরা পড়ছে না। তবে যাঁরা আরো সতর্কতা অবলম্বন করতে চান তাঁরা ধুয়ে খেতে পারেন।
বিবার্তা/জিয়া