নিমের বৈজ্ঞানিক নাম Azadirachta indica। নিমকে ইন্ডিয়ান লাইলাকও বলা হয়। আমাদের সবার পরিচিত নিম আয়ুর্বেদ, প্রাকৃতিক, ইউনানি এবং হোমিওপ্যাথি ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। নিমে ব্যাকটেরিয়া নাশক, ভাইরাস নাশক, ছত্রাক নাশক, বেদনানাশক, জ্বর নাশক, পচন নিবারক, জীবাণুনাশক, অ্যান্টি ডায়াবেটিক, রক্ত পরিষ্কারক এবং স্পারমিসাইডাল উপাদান আছে।
নিমের নানাবিধ ঔষধি গুণের জন্য একে ‘ওয়ান ট্রি ফার্মেসি’ও বলা হয়। নিম গাছ পরিবেশের জন্যও অনেক উপকারী। নিম গাছের প্রতিটা অংশ- শিকড়, বাকল, আঠা, পাতা, ফল, ডাল,বীজ এবং বীজের তেল ভেষজ ঔষধি হিসেবে ব্যবহার হয়। নিমের কয়েকটি উপকারিতার বিষয়ে আমরা জেনে নেব আজ।
খুশকির চিকিৎসায়: নিমের ব্যাকটেরিয়া নাশক ও ছত্রাক নাশক উপাদানের জন্য খুশকির চিকিৎসায় কার্যকরী ভূমিকা রাখে। নিম মাথার তালুর শুষ্কতা ও চুলকানি দূর করে।
● চার কাপ পানিতে এক মুঠো নিমের পাতা দিয়ে গরম করতে হবে যতক্ষণ না পানিটা সবুজ বর্ণ ধারণ করে।
● এই পানি ঠাণ্ডা হলে চুল শ্যাম্পু করার পর এই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। নিমের পানি কন্ডিশনারের মত কাজ করবে।
● সপ্তাহে ২-৩বার ব্যবহার করুন যতদিন না খুশকি দূর হয়।
ওজন কমাতে: যদি আপনি ওজন কমাতে চান বিশেষ করে পেটের তাহলে নিমের ফুলের জুস খেতে হবে আপনাকে। নিম ফুল মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে শরীরের চর্বি ভাংতে সাহায্য করে।
● একমুঠো নিম ফুল চূর্ণ করে নিন।
● এর সাথে এক চামুচ মধু এবং আধা চামুচ লেবুর রস দিয়ে ভালোভাবে মিশান।
● প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই মিশ্রণটি পান করুন।
রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে: নিম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চমৎকার ভাবে কাজ করে। নিমের পাতা রক্তের সুগার লেভেল কমতে সাহায্য করে। এছাড়াও রক্তনালীকে প্রসারিত করে রক্ত সংবহন উন্নত করে। ভালো ফল পেতে নিমের কচি পাতার রস প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পান করুন।
ছত্রাকের ইনফেকশন দূর করতে: যদি আপনার পায়ে কোন ফাঙ্গাল ইনফেকশন থাকে নিম ব্যবহার করুন। নিমে নিম্বিডল এবং জেডুনিন আছে যা ফাঙ্গাস ধ্বংস করতে পারে। নিম পাতার পেস্ট বানিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগালে নিরাময় লাভ করা যায়। আক্রান্ত স্থানে কয়েক ফোঁটা নিমের তেল দিনে তিনবার লাগালেও ভালো ফল পাওয়া যায়।
ত্বকের সমস্যা দূর করতে: ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ব্রণ, র্যা শ, এক্সিমা ও সোরিয়াসিস এর সমস্যা দূর করতে পারে নিম।
উকুনের চিকিৎসায়: নিমের ব্যাবহারে উকুনের সমস্যা দূর হয়। নিমের পেস্ট তৈরি করে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন, তারপর মাথা শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন এবং উকুনের চিরুনি দিয়ে মাথা আঁচড়ান।সপ্তাহে ২-৩ বার এটা করুন। ২ মাস এভাবে করুন। উকুন দূর হবে।
এরকম আরো নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানে যেমন মুখের অতিরিক্ত তেল দূর করে, ব্রণ ও ব্ল্যাক হেডস দূর করে, মাড়ি ও দাঁতের রোগ দূর করে, হেপাটাইটিসের নিরাময়কে ত্বরান্বিত করে, মশার কামড় থেকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সারের চিকিৎসায় নিম কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
বিবার্তা/জিয়া