১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার পবিত্র কোরবানির ঈদ। কোরবানির জন্য স্বাস্থ্যকর ও সুস্থ গবাদি পশুর চাহিদা প্রচুর। আর এই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, ইঞ্জেকশন ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে গরুকে মোটাতাজা করে থাকেন। যা পুরোপুরি অস্বাস্থ্যকর এবং ভয়ানক ক্ষতিকর।
সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান পশু কিনতে হলে কীভাবে চিনবেন? গরু দেখতে স্বাস্থ্যবান মনে হলেও সুস্থ নাও হতে পারে। দেখে নিন কয়েকটি উপায়।
ওষুধ, ইঞ্জেকশন ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে মোটাতাজা করা গরু আসলে স্বাস্থ্যবান হয় না। ওষুধের ফলে শরীরে পানি জমে, আর এর ফলে গরু হৃষ্টপুষ্ট দেখায়।
কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরু চিনতে হলে গরুর গায়ে আঙুল দিয়ে চাপ দিয়ে দেখতে পারেন। গরু সুস্থ হলে চাপ ছেড়ে দিলেই মাংস স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। এর ব্যতিক্রম হবে কৃত্রিম প্রক্রিয়ার মোটাতাজা গরুর বেলায়। ওষুধের মাধ্যমে মোটাতাজা করা গরুর শরীরে আঙুলের চাপ দিলে তা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে বেশি সময় নেবে।
সাধারণত গরু একটু চটপটে থাকে। কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরু শরীরে পানি জমার কারণে নড়াচড়া একটু কম করে। এক জায়গায় বসে থাকে। এসব ক্ষেত্রে গরুকে বসা থেকে উঠিয়ে হাঁটিয়ে দেখতে হয়।
গরুর শ্বাস-প্রশ্বাস দেখে গরুকে ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব। ট্যাবলেট খাওয়ানো হলে গরু দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করে। খুব ক্লান্ত দেখা যায় আর সারাক্ষণ হাঁপায়।
তাছাড়া গরুর পেছনের রানের মাংস পরীক্ষা করলে একটু ধারণা পাওয়া সম্ভব। ট্যাবলেট খাওয়ানো হলে গরুর মাংস নরম হয়ে যায়। আর সুস্থ গরুর রানের মাংস থাকবে একেবারে শক্ত।
হাটে যাওয়ার পর যে গরুটা দেখবেন চকচক করছে সেটা থেকে দূরে থাকবেন। কারণ ট্যাবলেট খাইয়ে মোটাতাজা করা গরুর চামড়া দেখতে চকচকে হয়। তাই দেখতে উসকোখুসকো, চামড়ার উপর দিয়ে হাড় বেরিয়ে থাকা গরুটা কিনতে চেষ্টা করুন।
গরুর মুখে অতিরিক্ত লালা বা ফেনা থাকাও কৃত্রিম উপায়ে গরুকে মোটা করার আরেকটি লক্ষণ। তাই এসব ব্যাপারে খেয়াল রাখুন।
একজন বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন, কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরুর মাংস খেলে মানুষের শরীরেও একইরকম প্রভাব পড়তে পারে। যেমন, শরীরে পানি জমে যাওয়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, মূত্রনালী ও যকৃতের বিভিন্ন রকম সমস্যা ইত্যাদি। সুতরাং কোরবানির পশু কেনার আগে দেখে শুনে কিনুন। সুস্থ থাকুন।
বিবার্তা/জিয়া