স্বাভাবিকভাবে চিনি খাওয়া ভালো। সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষ দৈনিক তিন থেকে পাঁচ চামচ চিনি খেতে পারেন। তবে চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার বেশি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই কেউ কেউ চিনির বিকল্প হিসেবে মধু খান। কেউ আবার লো ক্যালোরি সুগার বেছে নেন। কিন্তু সত্যিই কি চিনির বিকল্প আছে?
সাধারণ চিনি মানে সুক্রোজ। চিনি আখ কিংবা বিট গাছ থেকে তৈরি হয়। আখ এবং বিটের রসটুকু নিয়ে ভালমতো জ্বাল দিলে ওপরে যে স্ফটিক জমা হয় তা শুকিয়ে গুঁড়ো করলে চিনিতে পরিণত হয়।
পশ্চিমা বিশ্বে অনেকে চিনির বিকল্প হিসেবে অ্যাগাভে সিরাপ খান। প্রাকৃতিক মিষ্টির এই উৎসের ওপর এখন অনেকে ভরসা করছেন। অ্যালোভেরা অর্থাৎ ঘৃতকুমারী গাছের মত দেখতে অ্যাগাভে গাছ। এই গাছের ডাল থেকে নিঃসৃত রস যা অ্যাগাভে নেকটার নামে পরিচিত। অ্যাগাভে নেকটার ভালমতো জ্বাল দিয়ে পরিশোধন করে চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়। চিনির সবচেয়ে মিষ্টি উপাদান হল ফ্রুক্টোজ। আর অ্যাগাভে সিরাপে এই ফ্রুক্টোজ থাকে শতকরা ৯০ ভাগ। তাই চিনির চেয়েও বেশি মিষ্টি অ্যাগাভে।
অ্যাগাভে কি আদৌ চিনির স্বাস্থ্যকর বিকল্প? এর উত্তর, না। সাধারণ চিনির চেয়ে অ্যাগাভে স্বাস্থ্যকর নয়। অনেকের ধারণা সাদার চেয়ে বাদামি চিনির উপকারিতা বেশি, তবে সত্যিটা হল দুটোর পুষ্টি উপাদানে তেমন কোন পার্থক্য নেই। ফুল থেকে মৌমাছিদের সংগ্রহ করা মধুতে ফ্রুক্টোজ এবং গ্লুকোজ পাওয়া যায়। তাই মধুকেও আলাদা কাতারে ফেলা যাবে না।
তবে কি চিনি খাওয়া বাদ দেবেন? না, চিনি খাবেন তবে হিসাব করে। এক্ষেত্রে কী করবেন? প্রতিদিন চকলেট, পেস্ট্রি, আইসক্রিম, লজেন্স, বিস্কুট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। মাঝে মাঝে খান তাও পরিমাণে কম। ঘরে কোন কিছু বেক করলে চিনির পরিমাণ অর্ধেকে নামিয়ে আনুন। প্রয়োজনে মিষ্টি ফল ব্যবহার করুন।
চা-কফিতেও চিনির ব্যবহারে সতর্ক থাকুন। চিনি ছাড়া চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস করতে চাইলে কষ্ট করে এক সপ্তাহ চা-কফিতে চিনি মেশাবেন না। স্বাদগ্রন্থিগুলো এই অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে পড়লে সপ্তাহ শেষে চিনি মিশিয়ে খেলে দেখবেন ভাল লাগছে না।
বিবার্তা/জিয়া