নানা রকম সুস্বাদু শাকসবজির মধ্যে ঢেঁড়স একটা। এটি মানব শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কিন্তু অনেকেই সবজিটি পছন্দ করেন না। সাধারণত গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে ঢেঁড়স চাষ করা হয়। তবে ঢেঁড়স প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়।
● ঢেঁড়সে উচ্চমাত্রার ফাইবার, ভিটামিন কে, সি, ভিটামিন বি ১, বি ৩, বি ৬, ফোলেট, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, বিটা ক্যারোটিন, লুটেইন, কম ক্যালরি ও ফ্যাট থাকে এবং এটি পুষ্টিতে ভরপুর। ঢেঁড়সে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানও রয়েছে।
● আমাদের শরীরের তরলের ভারসাম্য রক্ষা করে পটাসিয়াম। কারণ এটি সোডিয়াম নিয়ন্ত্রণ করে। পটাসিয়াম রক্তনালী শিথিলকরণে সাহায্য করে ও রক্তচাপ কমায়। ঢেঁড়সে পটাসিয়াম থাকায় এটি কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেমের টান কমাতে অর্থাৎ রক্তজমাট হতে বাধা দেয়।
● ঢেঁড়সে খুব কম পরিমাণ ক্যালরি এবং উচ্চমাত্রার ফাইবার থাকে বলে এটি ওজন কমাতে আদর্শ। ঢেঁড়স দীর্ঘসময় ধরে পেটভরা রাখে।
● কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে ঢেঁড়স খেতে পারেন কারণ এর মিউসিলাজিনাস ফাইবার পরিপাক নালী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
● ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় আর ঢেঁড়সে আছে ভিটামিন সি। যাদের এনেমিয়ার সমস্যা আছে তারা ঢেঁড়স খেতে পারেন। কারণ সবজিটিতে আয়রন, ফোলেট ও ভিটামিন কে যা রক্তশূন্যতা দূর করে।
● ঢেঁড়স কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি লিভার পরিষ্কার করে ও ফ্যাট জমতে দেয় না।
●ঢেঁড়স লিভারকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে।
● ভিটামিন এ এর পাশাপাশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান বিটা ক্যারোটিন, লুটেইন এবং জিয়াজেন্থিন থাকায় ঢেঁড়স চোখের জন্য উপকারী। ম্যাকুলার ডিজেনারেশন ও চোখে ছানি পড়া রোধে নিয়মিত ঢেঁড়স খান।
● প্রতি একশ গ্রাম ঢেঁড়সে ৬৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ও ১.৫ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া যায়। এটি হাড়, দাঁত ও মাড়ি মজবুত করে।
● ত্বককে তারুণ্যদীপ্ত করতে ঢেঁড়সের বিবিধ পুষ্টি উপাদান সাহায্য করে। কচি ঢেঁড়স সেদ্ধ করে পেস্ট বানিয়ে জোজোবা তেলের সাথে মিশিয়ে মুখে ও ঘাড়ে লাগান। এটি সপ্তাহে দুদিন ব্যবহার করতে হবে।
● খুশকি ও উকুন থেকে মুক্তি পেতে ঢেঁড়স লম্বা করে কেটে পানিতে দিয়ে ফুটিয়ে সেই পানি ছেঁকে নিন। এর সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন।
● যেসব নারী গর্ভধারণ করতে চান তারা ঢেঁড়স প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন। কারণ ঢেঁড়সে ফলিক এসিড বা ফোলেট থাকে যা শুধু গর্ভধারণেই সাহায্য করে না ভ্রুনের উন্নয়নেও সাহায্য করে। গর্ভপাত রোধেও ঢেঁড়স খাওয়া অত্যাবশ্যক।
● হাঁপানিতে ভালো কাজ করে ঢেঁড়স। রোগটির হারবাল চিকিৎসা হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া ঢেঁড়স বীজের তেল শ্বাসকষ্ট কমায়।
বিশেষ সতর্কতা
● যাদের কিডনি বা পিত্তথলিতে পাথর রয়েছে তারা ঢেঁড়স এড়িয়ে চলুন। কারণ সবজিটিতে উচ্চমাত্রার অক্সালেট থাকে। আর অক্সালেট পাথরের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
● ভাজা ঢেঁড়স খেলে কোলেস্টেরল বাড়ে। ঢেঁড়স রান্নার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
● কেনার সময় চেষ্টা করুন অর্গানিক ঢেঁড়স কিনতে।
বিবার্তা/জিয়া