তিসি হচ্ছে আঁশসমৃদ্ধ, প্রোটিন, ক্যলসিয়াম,এন্টি অক্সিডেন্টস, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড এবং মিনারেলের একটি অসাধারণ সমন্বয়। এতে ভিটামিন বি কপ্লেক্স, ম্যাঙ্গানিজ ও ম্যাগনেসিয়াম প্রচুর পরিমাণে থাকে। তিসি আমাদের শরীরে এন্টি অক্সিডেন্টের কাজ করে দেহকে শক্তিশালী রাখে এবং সহজে ক্লান্ত হতে দেয় না।
তিসির উপকারিতা
● শরীরের দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। খাদ্য হজমে সহায়তা করে। অতিরিক্ত মেদ কমায়।
● তিসির মধ্যে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট ব্লাড ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
● গ্যাস্ট্রিক ও আলসার দূর করে এবং অ্যাজমা থেকে রক্ষা করে।
● যারা তামাক বা অন্য নেশায় আক্রান্ত থাকে তাদের জন্য তিসি খুবই উপকারী।এটি নেশা জাতীয় দ্রব্য থেকে মুক্তি দিতে হবে। প্রতিদিন খাওয়ার পর অল্প পরিমাণ তিসি চাবালে দ্রুত নেশা থেকে মুক্তি পেতে পারেন একজন রোগী।
● যারা হাই ব্লাডপ্রেসারের রোগী তারা তাদের খাদ্য তালিকায় তিসি রাখতে পারেন। প্রতিদিন ২চামচ তিসির পাউডার এর জন্য যথেষ্ট। এর ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ও এমাইনো এসিড বিপি কমাতে সহায়তা করে।
● তিসি আমাদের হৃদপিণ্ডকে সবল রাখতে কাজ করে। হার্টে ব্লক বা ইরেগুলার হার্টবিট রোধ করতেও অনেক সাহায্য করে।
● গবেষণা থেকে জানা গেছে, তিসি আমাদের শরীরের HDL গুড কোলেস্টোরাল বাড়ায় এবং খারাপ কোলেস্টোরালকে কমায়। অর্থাৎ এটি আমাদের কোলেস্টোরালকে নিয়ন্ত্রণ করে।
● যারা ডায়াবেটিসের রোগী তাদের ইনসুলিন নেয়ার প্রয়োজন নেই যদি এই তিসি সেবন করে থাকেন দৈনিক অন্তত ১৫-২০গ্রাম তিসি। আর যাদের ডায়াবেটিস নেই তারা যদি এটি গ্রহণ করে তবে তাদের ডায়াবেটিস হউয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
● তিসি আমাদের হতাশা ও দুশ্চিন্তা দূর করে। মেজাজ ফুরফুরে রাখে।
● এটি আমাদের শরীরের ক্যলসিয়াম লেভেল বাড়ায়। ফলে হাড় ও শরীরের জয়েন্টগুলো সুস্থ থাকে। ফলে বৃদ্ধ বয়সে হাড্ডিজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
● তিসি বীজ মেয়ে এবং ছেলেদের fertility বাড়ায়। এমন কি মেনোপোজের সময় ব্যথা দূর করতেও তিসি অনেক উপকারী।
● তিসি আমাদের চুল ও ত্বকের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি শস্য। এটি মুখের বলিরেখা প্রতিরোধ করে, চুল পড়া রোধ করে, ত্বককে মসৃণ রাখে, ত্বক উজ্জ্বল রাখে, যৌবন ধরে রাখে। এটি ব্রণ ও যেকোন চামড়া জাতীয় রোগ প্রতিরোধ করে। এটি মাথায় খুশকি হতে দেয় না এবং মাথার ত্বকের ময়েশ্চারাইজার ঠিক রাখে।
তিসি খাওয়ার কিছু নিয়ম
● তিসিকে খাওয়ার জন্য একে ভেজে নিতে হবে। এবং এটির পাউডার তৈরি করতে হবে।
● প্রতিদিন ঘুমানোর পূর্বে বা সকালের নাস্তার সাথে খেতে হবে। তবে রাতে খেলে এর কার্যকারিতা বেশি হয়।
● প্রতিদিন ছোট চামচের এক চামচ তিনি যথেষ্ট স্বাস্থ্যের জন্য।তবে এর চেয়ে বেশি খেলে ডায়রিয়া বা গেস্ট্রিক হতে পারে।
রক্তের গ্রুপের কিছু ব্যাপার আছে তিসি খাওয়া নিয়ে। যেমন,
● তিসি দিয়ে খুব মজাদার ভর্তা বানানো যায়। এক্ষেত্রে রোস্টেড তিসিকে লবণ, মরিচ ও পেয়াজ দিয়ে বেটে নেয়া যায়।
● কোন জটিল রোগ থাকলে এটি খাওয়া ঠিক হবে না।
● তিসিকে একটি নেয়ামত বলা চলে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এই খাবার নিয়মিত রাখা যায়।
বিবার্তা/জিয়া
