খাবারের সচেতনতা বাড়লে ক্যানসারের মতো মরণব্যধি রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। সম্প্রতি ত্রিপুরায় আন্তর্জাতিক ক্যান্সার স্ক্রিনিং নেটওয়ার্কের (আইসিএসএল) তিন দিনের এক বৈঠকে এমনটিই আশা প্রকাশ করেছেন ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারত, আমেরিকা, ইতালি, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশের ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যানসার রুখতে প্রথমেই কী কী জিনিস বা অভ্যাস বর্জন করা উচিত তা জানা দরকার। তামাক ও মদ ছাড়ার কথা বলেন তারা। এছাড়া সুপুরি, খৈনি, পান থেকেও ইসোফেগাস বা গ্যাসট্রিক ক্যানসার হতে পারে। এই তালিকায় আরো রয়েছে পিৎজা, বার্গার, স্মোকড মিট বা তন্দুর জাতীয় খাদ্যও।
ক্যানসার প্রতিরোধে ফাইবার মিশ্রিত খাবার, টাটকা সবজি ও ফল বেশি করে খাওয়ার পরামর্শ দেন ইনস্টিটিউট অফ সাইটোজি অ্যান্ড প্রিভেনটিভ অনকোলজির প্রধান রভি মেহরত্রা।
বিশেষজ্ঞরা জানান, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনশৈলীর পরিবর্তন দেহে ক্যানসার সংক্রমণের আশঙ্কা কমিয়ে দিতে পারে। কায়িক পরিশ্রমের গুরুত্বের কথাও তুলে ধরেন তারা। তারা জানান, সাইকেল চালানো বা সাঁতার কাটা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট ফর মেডিকেল সায়েন্সের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ জি কে রথ জানান, ৬৫ শতাংশ ক্যানসার প্রতিরোধযোগ্য। প্রাথমিক পর্যয়ে ধরা পড়লে ৮০ শতাংশ ক্যানসার সারানো যায়।
রথকে সমর্থন জানিয়ে আমেরিকার সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথের প্রধান টেড ট্রিম্বল জানান, মানুষের সচেতনতাও ক্যানসারের অন্যতম ওষুধ।
বৈঠকের আগে সাংবাদিক সম্মেলনে আমেরিকার ‘ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের’ বিশেষজ্ঞ সুধা শিবরাম জানান, সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে নারীদের সার্ভাইক্যাল ক্যানসারের মাত্রা কমছে। কিন্তু বাড়ছে ব্রেস্ট ক্যানসার। অনেকেই দেহে ক্যানসারের লক্ষণ প্রথমে টের পান না। দেহে অনেকটা ছড়ানোর পরই এটি ধরা পড়ে।
যেসব সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত সে সম্পর্কে বক্তব্য দেন ফ্রান্সের আইএআরসির ক্যানসার বিশেষজ্ঞ শঙ্কর নারায়ণ। তিনি বলেন, দেহের কোনো অংশে ক্রমাগত রক্তক্ষরণ হলে, কোনো অংশ ফুলে উঠলে, বুকে মাঝেমধ্যেই শ্লেষ্মা জমলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।
বিবার্তা/নিশি