ভিনগ্রহ থেকে আসা কোন রেডিও সংকেত পেতে পৃথিবীর প্রয়াসের কোন অন্ত নেই। কিন্তু পদার্থ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং ভিনগ্রহের সংকেত ফেরত দিতে আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিলেন। শুক্রবার ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, স্টিফেন হকিং সম্প্রতি ২৫ মিনিট ব্যাপ্তির একটি অনলাইন ফিল্মে কাজ করেন; যেখানে ১৬ আলোকবর্ষ দূরের গ্রহ গ্লিজ-৮৩২সি-তে ভ্রমণকারীর ভূমিকায় তিনি ছিলেন।
হকিং বলেন, ‘যদি আমরা কোন অগ্রসর সভ্যতার মুখোমুখি হই, তবে তা হবে অনেকটা কলম্বাস যখন আমেরিকায় রেড ইন্ডিয়ানদের সামনে গিয়ে হাজির হয়েছিলেন তার মতো। আর আমরা যদি রেড ইন্ডিয়ানদের ভূমিকায় থাকি তবে ব্যাপারটা আমাদের জন্য মোটেও সুখকর হবে না।’
‘স্টিফেন হকিংস ফেভারিট প্লেস’ নামক ওই অনলাইন ফিল্মটিতে হকিংয়ের একটি উক্তি ছিলো ‘তারাদের দিকে তাকিয়ে মাঝেমাঝেই আমার মনে হয় উপর থেকে আমাকেও কেউ দেখছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার বয়স যত বাড়ছে, ততই মনে হচ্ছে মহাশূন্যে আমরা নই।’
তিনি বলেন, ‘একদিন হয়তো ‘গ্লিজ-৮৩২সি’-এর মতো কোন গ্রহ থেকে সত্যিই এলিয়েনদের সংকেত চলে আসবে। তবে, এর ফিরতি বার্তায় আমাদের আরো সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।’
হকিংয়ের নতুন ফিল্মটিতে ‘টাইম এন্ড স্পেস’-এর উপর ভিত্তি করে এক প্রযোজনায় দর্শকরা দেখতে পারবেন মহাবিশ্বের আশ্চর্য অনেক রহস্য উন্মোচন করে এক ব্যক্তিগত যাত্রাকে।
গ্লিজ-৮৩২সি গ্রহ সম্পর্কে জানা যায়, এটি আমাদের ১ লাখ আলোকবর্ষ জুড়ে বিস্তৃত মিল্কিওয়েতে পৃথিবী থেকে প্রায় ১৬ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। গ্রহটি তার কক্ষপথে প্রতি ৩৬ দিনে একবার একটি নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে। নক্ষত্রটি আমাদের সূর্যের চেয়েও ছোট, তুলনামূলক আলো কম এবং সূর্যের চেয়ে শীতল। তবে, গ্লিজ-৮৩২সি গ্রহটি আমাদের পৃথিবীর প্রায় পাঁচগুণ বড়। ২০১৪ সালে রবার্ট হুইটেনমায়ার নামে এক বিজ্ঞানীর নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একদল গবেষক এই গ্রহটি আবিষ্কার করেন। যেখানে প্রাণের অস্তিত্ব আছে এমন অনুমান করছেন বিজ্ঞানীরা।
তবে, এই গ্রহকে উপলক্ষ করে স্টিফেন হকিং আমাদের যে বার্তা দিলেন তা হলো- এমন সদৃশ কোন গ্রহ থেকে যদি আমাদের আগেই কোন প্রাণ পৃথিবীতে সংকেত পাঠায় তবে নিঃসন্দেহে তারা আমাদের চেয়ে অগ্রগামী। সেক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, এমন হতে পারে যে তারা আমাদের দাসে পরিণত করতে চাইবে। যেমনটা কলম্বাস রেডইন্ডিয়ানদের করেছিলেন।
বিবার্তা/জিয়া