সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আলেপ্পো শহরে সপ্তাহখানেক ধরে চলা ভয়াবহ সংঘাতের জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের দাবি, রুশ বাহিনী সেখানে বর্বরতা চালাচ্ছে।
আলেপ্পো পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত সামান্থা পাওয়ার রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তুলে বলেন, আসাদ সরকারের সাথে একসাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ায়, সিরিয়া বিষয়ে রাশিয়ার দেয়া বক্তব্য পুরোপুরি মিথ্যা।
সামান্থা বলেন, ‘কেউই যুক্তরাষ্ট্রকে সন্ত্রাসীদের দেয়া বক্তব্যে সন্তুষ্ট করতে পারবে না। আমাদের জনগণ প্রায়ই সারাবিশ্বে তাদের লক্ষ্যে পরিণত হচ্ছে। রাশিয়া এখন যা করছে তাকে কোনোভাবেই সন্ত্রাস বিরোধী কার্যকলাপ বলা যাবে না। এটি বর্বরতা।’
নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্যদের এক হয়ে এ ব্যাপারে রাশিয়াকে থামানোর আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র। অন্য অনেক সদস্যই অবশ্য আলেপ্পোতে জাতিসংঘের ত্রাণবহরে হামলায় রাশিয়াকেই দায়ী মনে করছে। তাদের বক্তব্য, এমনটি হয়ে থাকলে রাশিয়া স্পষ্টতই যুদ্ধাপরাধ করেছে। তবে রাশিয়া ত্রাণবহরে হামলা চালানোর কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের এ দাবি অস্বীকার করে জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভিটালি চুরকিন যুদ্ধবিরতি বন্ধের জন্যে বিদ্রোহী সশস্ত্র গ্রুপকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘শতশত সশস্ত্র দল সিরিয়ার অভ্যন্তরে ধ্বংস চালিয়ে যাচ্ছে এবং সিরিয়ায় শান্তি ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব একটি কাজ।’
সিরিয়া বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত স্টেফান ডি মিসতুরার মতে, যুদ্ধবিরতি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত অন্তত ২১৩ জন বেসামরিক মানুষ মারা গেছে। তার মতে, এই যুদ্ধ ভীতির নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সমঝোতায় সাতদিনের অস্ত্রবিরতির অবসান ঘটে। সেদিনই বিদ্রোহী ও জঙ্গি নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পো পুনরুদ্ধারে বিশেষ অভিযানের ঘোষণা দেয় সিরীয় সরকারি বাহিনী। এরপরই শহরটি হয়ে উঠেছে দেশটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্র। সিরিয়ায় কর্মরত মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, গত সাতদিনে সেখানে যে পরিমাণ হতাহত হয়েছে তার প্রায় অর্ধেকই শিশু। সূত্র: বিবিসি
বিবার্তা/নিশি