আর কিছু সময় পরই ঐতিহাসিক বিতর্কযুদ্ধে নামছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক পার্টির হিলারি ক্লিনটন ও রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প। কোটি কোটি আমেরিকানের পাশাপাশি পুরো বিশ্বের রাজনীতি সচেতন সবার মনোযোগ এখন ‘গ্রেটেস্ট পলিটিক্যাল শো অন আর্থ’ শীর্ষক এ বিতর্কযুদ্ধে। এই লড়াইয়েই প্রমাণ হবে হোয়াইট হাউসে ওঠার দৌড়ে যুক্তি-তর্কে এগিয়ে থাকছেন কে।
আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির ইতিহাসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক এ বিতর্কযুদ্ধ শুরু হবে স্থানীয় সময় সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায়)। নিউইয়র্কের হেমস্টেডে হোফস্ট্রা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিলনায়তনের মঞ্চ থেকে দেশটির প্রায় সবগুলো প্রধান সংবাদমাধ্যম, ইউটিউব, টুইটার ৯০ মিনিটের এই বিতর্ক অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করবে। সি-স্প্যান, এবিসি, সিবিএস, ফক্স ও এনবিসি ছাড়াও সিএনএন, ফক্সনিউজ, এমএসএনবিসিও রয়েছে এই তালিকায়।
আগামী ৮ নভেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে দুই প্রার্থীদের মধ্যে হবে ৩ দফা বিতর্ক। বিতর্কে নিজেদের যোগ্যতার কথা দেশবাসী তথা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে হিলারি ও ট্রাম্পের। তাদের যুক্তি-তর্ক বিচার-বিশ্লেষণ করেই অনেক ভোটার, বিশেষ করে তরুণরা সিদ্ধান্ত নেবেন।
সোমবার রাতে প্রথম বিতর্কের সঞ্চালক হচ্ছেন এনবিসি নাইটলি নিউজের উপস্থাপক লেস্টার হল্ট।
টিকেট কেটে সবাই প্রস্তুত হিলারি ও ট্রাম্পের প্রথমবারের মতো মুখোমুখি বিতর্ক দেখার জন্য। তেমনভাবে প্রস্তুত ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান শিবিরও।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, পুরো আমেরিকায় প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের আমেজ লেগেছে। রাত ৯টার আগ থেকেই টেলিভিশন, স্মার্টফোন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় চোখ লেগে থাকছে ১০ কোটিরও বেশি আমেরিকানের। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে চোখ থাকছে বিশ্বের রাজনীতি সচেতন কোটি কোটি মানুষেরও।
এবারের বিতর্ক নিয়ে এতো বেশি উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, সংবাদমাধ্যম মনে করছে, ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি দেখা হিলারি-ট্রাম্পের বিতর্কই। ১৯৮০ সালে জিমি কার্টার ও রোনাল্ড রিগ্যানের মধ্যকার বিতর্ক সর্বোচ্চ ৮ কোটি আমেরিকান প্রত্যক্ষ করে।
এরই মধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে বিতর্কের পূর্ণাঙ্গ শিডিউল। প্রথম বিতর্কটি ৬টি অংশে বিভক্ত থাকবে। প্রতিভাগে কম-বেশি ১৫ মিনিট করে সময় বরাদ্দ থাকবে। সঞ্চালক নিজেই ৬টি প্রধান বিষয় নির্ধারণ করে একসপ্তাহ আগেই তা ঘোষণা করেছেন। প্রতিটি অংশে সঞ্চালক একটি প্রশ্ন উত্থাপন করে আলোচনা ফাঁদবেন। উভয় প্রার্থী তাতে ২ মিনিট করে সময় নিয়ে উত্তর দেবেন। এরপর প্রার্থীরা একজন অপর জনের উত্থাপিত প্রসঙ্গের উত্তর দিতে পারবেন। আলোচনা বিষয়ের গভীরে টেনে নিতে এবং উভয়ের মধ্যে সময়ের ভারসাম্য রাখতে সঞ্চালক ভূমিকা রাখবেন।
৭০ বছর বয়সী ট্রাম্পের জন্য এ ধরনের বিতর্ক এবারই প্রথম হলেও ৬৮ বছর বয়সী হিলারি এর আগে ২০০০ সালে নিউইয়র্কের সিনেটর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিতর্কে কংগ্রেসম্যান রিক ল্যাজিওকে হারিয়ে দেন।
বিবার্তা/ইফতি