ইসরাইলের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী শিমন পেরেস বিশ্বব্যাপী পরিচিত ছিলেন একজন শান্তিকামী ও দূরদর্শী মানুষ হিসেবে। কিন্তু আরব বিশ্বের স্মৃতিতে পেরেস অন্যরকম- তিনি ইসরাইলের সমরশক্তি গড়ে তুলেছেন, লেবাননে যুদ্ধ করেছেন এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অনেক নীতি প্রণয়ন করেছেন।
এ নীতিরই প্রতিফলন দেখা গেছে গত বুধবার পেরেসের মৃত্যুর পর। পশ্চিমা দুনিয়া যখন আবেগে উদ্বেল, আরব বিশ্ব তখন সম্পূর্ণ নীরব। শুক্রবার পেরেসের শেষকৃত্যে যখন পশ্চিমা বিশিষ্টজনদের ঢল নামলো, তখন আরব নেতাদের কারো আসার কথাই শোনা গেলো না। এমনকী যে মিশর ও জর্দানের সঙ্গে ইসরাইলের শান্তি চুক্তি রয়েছে, তারাও নয়।
এই নীরবতাই প্রকাশ করে আরব বিশ্বে ইসরাইলবৈরিতা কতটা তীব্র, বিশেষ করে যখন শান্তি প্রক্রিয়া মুখ থুবড়ে পড়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু কট্টর নীতি অবলম্বন করে চলেছেন।
জীবনের শেষ দিকে এসে পেরেস তেল আবিবে একটি পিস সেন্টার খুলেছিলেন, যার লক্ষ্য ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলিদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নীতিকে এগিয়ে নেয়া। এছাড়া দেশের প্রেসিডেন্ট থাকাকালেও তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে শান্তির পক্ষে বক্তব্য দিতেন। ১৯৯০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে ফিলিস্তিনের সঙ্গে অসলো চুক্তি করে পান নোবেল শান্তি পুরস্কার।
কিন্তু আরব বিশ্বে, বিশেষ করে ফিলিস্তিনিদের অনেকেই পেরেসের শান্তি বিষয়ক কথাবার্তাকে স্রেফ বাকোয়াজি ছাড়া আর কিছুই ভাবতেন না।
এ প্রসঙ্গে মিশরের প্রখ্যাত কলামিস্ট আবদুল্লাহ আল-সেনাভি বলেন, পেরেস সবসময় নিজেকে শান্তিবাদী হিসেবে তুলে ধরতে চাইতেন, কিন্তু আরব বিশ্বে কেউ তাকে বিশ্বাস করতো না। কেনো করবে? আরবরা তো দেখেছে যেখানে যুদ্ধ, সেখানেই পেরেস।
তিনি আরো বলেন, পেরেস তো ইসরাইলের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ফলে লাখো লাখো ফিলিস্তিনির জীবনে যে ‘নাকবা’ (দুর্যোগ) নেমে আসে, পেরেস তো তার সঙ্গেও যুক্ত।
পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিন সরকারের সাবেক মুখপাত্র ঘাসান খাতিব তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি যে ঐতিহাসিক অন্যায় করা হয়েছে, পেরেসের তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে। সূত্র: আরব নিউজ
বিবার্তা/হুমায়ুন/রয়েল