পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) মিটার রিডার ও ম্যাসেঞ্জারদের চাকরি থেকে ছাঁটাই না করার আহ্বান জানিয়েছেন মিটার রিডার ও ম্যাসেঞ্জার ঐক্য পরিষদের নেতারা। পাশাপাশি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পদ্ধতিও চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মিটার রিডার ও ম্যাসেঞ্জার ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত মানবন্ধনে এ আহ্বান জানানো হয়।
মানববন্ধনে মিটার রিডার ও ম্যাসেঞ্জার ঐক্য পরিষদের নেতারা জানান, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্বাহী কমিটি ১৫তম সভায় একজন মিটার রিডার ও ম্যাসেঞ্জারের বিপরীতে ৪ হাজার রিডিং গ্রহণ ও ৫ হাজার বিল বিতরণের দফতর আদেশ জারি করে। যা পূর্বে ১৫০০ থেকে ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ১৭০০ এবং বর্তমানে ২ হাজার করা হয়েছে। কিন্তু এবার পূর্বের সাথে সামঞ্জস্য না রেখে একবারেই দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ানো হয়েছে। যা অমানবিক। কতিপয় অসাধু সিনিয়র ও জুনিয়র জিএমদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করার লক্ষ্যে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে এই বর্ধিত কাজ চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।
তারা আরো জানান, বর্তমানে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে সকল মিটার রিডার ও ম্যাসেঞ্জারের চুক্তি নবায়ন ও অন্য সমিতিতে অভিজ্ঞতার আলোকে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করে নতুনভাবে অনভিজ্ঞ লোক নিয়োগ বাণিজ্যকরণের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এতে সারাদেশে পল্লী বিদ্যুতের ৭৮টি সমিতির প্রায় ১০ হাজার ৫০০ লোকের চাকরি হতে অপসারণের চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে ৩ হাজার জনের ছাঁটাই করা হয়েছে। যাদের বয়স ৩৫-৪০ বছরের মধ্যে। আরও সাড়ে ৭ হাজার মিটার রিডার ও ম্যাসেঞ্জার কর্ম হারানোর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। কিন্তু চাকরির নিয়োগ বিধি অনুযায়ী এক সমিতিতে ৯ বছর করে ৫৫ বছর কাজ করতে পারবেন একজন মিটার রিডার ও ম্যাসেঞ্জার। অথচ যাদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে তাদের বয়স ৯ বছরের কম। আবার যে সাড়ে ৭০০০ মিটার রিডার ও ম্যাসেঞ্জার চাকরি হারানোর অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে তাদের চাকরির বয়সও ৯ বছরের নিচে। তাই এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে সংগঠনটি প্রধানমন্ত্রী, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী, শ্রম প্রতিমন্ত্রী ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাছে দাবি জানিয়েছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অজয় কুমার মণ্ডল বলেন, ৯ বছরের জন্য বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু সরকার নতুন পে-স্কেল ঘোষণার ফলে আমাদের বেতন বৃদ্ধি পাওয়ায় সমিতির লস ও খরচ কমানোর কথা বলে নবায়নযোগ্য চুক্তিভিত্তিক এ নিয়োগ বন্ধ করে দেয়া হয়। পাশাপাশি চাকরির চুক্তিভিত্তিক মেয়াদ ৯ বছর পূর্ণ না হলেও ছাঁটাই করা শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় আমরা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পদ্ধতি চালু রাখা ও মিটার রিডার ও ম্যাসেঞ্জারদের চাকরি থেকে ছাঁটাই না করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
মানববন্ধনে নেতারা ১৫ অক্টোবরের মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ঘেরাওসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।
সংগঠনের সভাপতি আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- সিলেট পবিস-১ এর সভাপতি বেলাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, কুমিল্লা পবিস-৩ এর ম্যাসেঞ্জার মো. মফিজুল ইসলাম, মিটার রিডার মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
বিবার্তা/বিপ্লব/রয়েল