আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে সাংগঠনিক তৎপরতা জোরদার করছে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)। ইতোমধ্যে পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা সারাদেশে অনানুষ্ঠানিকভাবে গণসংযোগ কর্মসূচি শুরু করেছেন।
পার্টির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা স্ব স্ব জেলা কমিটির নেতাদের সঙ্গে সভা করছেন। আগামী ১ অক্টোবর থেকে সারদেশে আনুষ্ঠানিক সাংগঠনিক সফর শুরু করবেন পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ওই দিন তিনি সিলেটের শাহজালাল মাজার জিয়ারত করে সফর শুরু করবেন বলে জাপা সূত্রে জানা গেছে।
১ অক্টোবর সিলেট একটি জনসভায়ও ভাষণ দেবেন এরশাদ। এরশাদের সিলেটের জনসভা সফল করার জন্য সিলেট বিভাগের জাপা নেতারা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। প্রতিদিন সিলেট বিভাগের বিাভিন্ন জেলা উপজেলায় সভা সমাবেশ প্রস্তুতি সভা হচ্ছে।
গত ৯ অক্টোবর সিলেট সফরে গিয়ে যৌথ সভা করেছেন পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। এই সময় জাপা মহাসচিবের সঙ্গে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, তাজুল ইসলাম চৌধরী ও সাহিদুর রহমান টেপাও অংশ নেন।
এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা-৪ আসনের এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আমরা জাতীয় পার্টিকে তৃণমূলে আরো সুসংগঠিত করার উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী জাতীয় নির্বাচনে আমরা তিনশ’ আসনে যোগ্য প্রার্থী দিতে চাই।
তিনি বলেন, প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ আগে ভাগেই শেষ করতে চান আমাদের পার্টির চেয়ারম্যান। এ জন্য পার্টির চেয়ারম্যানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা দেশের সব জেলা, উপজেলা সফর করে সভা-সমাবেশ করবেন। এর পাশাপাশি যেসব জেলায় আমাদের সম্মেলন বাকি রয়েছে আগামী ৩ মাসের মধ্যে সেসব জেলায় সম্মেলনও শেষ করা হবে।
জানা গেছে, সাংগঠনিক সফরের অংশ হিসেবে পার্টির চেয়ারম্যান, এইচএম এরশাদ, বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতি মন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, কাজী ফিরোজ রশীদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, মীর আব্দুস সবুর আসুদসহ একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ঈদের দিন থেকে শুরু করে টানা তিনদিন নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগের পাশাপাশি একাধিক সভা সমাবেশ করেছেন।
এছাড়া কেন্দ্রীয় নেতারা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার পাশাপাশি অন্যান্য জেলা উপজেলার নেতাদের সঙ্গেও দফায় দফায় সভা করছেন।
সোমবার ঢাকা ও নোয়াখালী জেলার নেতাদের নিয়ে সভা করেছেন এ দুই জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত জাপার ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা।
তার নিজের নির্বাচনী এলাকা শ্যামপুর কদমতলিতে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর কর্মী সমাবেশ করার কথা রয়েছে।
কুমিল্লা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সল চিশতি। সভায় সভাপতিত্ব করেন মো. নুরুল ইসলাম মিলন এমপি।
রবিবার কক্সবাজার জেলা জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভায় অংশ নিয়েছেন জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নুরু।
২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। পার্টির কেন্দ্রীয় কায্যনির্বাহী সদস্য সুজন দে অংশ নেবেন।
এছাড়া কয়েকদিনের মধ্যে রাঙামাটি সফরে যাবেন জেলাটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কাজী ফিরোজ রশীদ।
জাপার মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি বলেছেন, আমরা আমাদের রাজনীতি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। সারা দেশেই একযোগে আমাদের সাংগঠনিক কাজ শুরু হয়েছে। দেশের ৬৪টি জেলার জন্য ৬৪ টিম সাংগঠনিক টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিমের সদস্যরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো জেলা উপজেলায় আমাদের টিমের সদস্যরা ছুটে যাচ্ছেন। সভা সমাবেশ বর্ধিত সভা করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী ১ জানুয়ারি ঢাকায় বড় ধরনের মহাসমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতীয় পার্টি। এ কারণে সারা দেশেই শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তুলতে চায় জাপা। এ জন্য ৩ মাস সময়ও বেঁধে দেয়া হয়েছে। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর, এই ৩ মাস দলকে তৃণমূল পযার্য়ে সুসংগঠিত করে ১ জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে ঢাকায় মহাসমাবেশ করা হবে।
এর আগে চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, খুলনা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুরে জনসভার আয়োজন করবে জাতীয় পার্টি। এই সব বিভাগীয় জনসভায় এরশাদসহ দলের শীর্ষ নেতারা অংশ নেবেন।
বিবার্তা/বিপ্লব/কাফী