মোসাম্মত শিউলি। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়েছে পাঁচ বছর আগে। একমাত্র মেয়েকে কাছে নিয়ে শুরু করতে চেয়েছিলেন নতুন জীবন। তবে তার সেই পথটি ছিল খুব কঠিন।
তার স্বামীর বাড়ির সঙ্গে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয় মেয়েকে নিজের কাছে নিয়ে আসার জন্য। পাঁচ বছর পর ব্যর্থ হয়ে তিনি লন্ডনে পাড়ি জমান।
শিউলি বলেন, ‘জীবন থেকে পালানোর জন্যই গিয়েছিলাম লন্ডনে। সেখানে তিনি পড়াশোনা করেন। এরই মাঝে কয়েক বছর পর হঠাৎ একদিন তার মেয়ে ফোন করে বলে ‘মা আমি তোমার কাছে যেতে চাই’।
শুরু হয় শিউলির আরেক যুদ্ধ। মেয়েকে নিজের কাছে লন্ডনে নেয়ার চেষ্টা করেন অনেক। সেখানেও নানা বাধা। অবশেষে তিনিই ফিরে আসেন দেশে।
কয়েক দিন আত্মীয় স্বজনের কাছে থাকেন। তবে তারা যে খুব হাসিমুখে তাকে গ্রহণ করেছিল তেমনটা না।
অবশেষে ঢাকায় বাসা নিলেন মেয়েকে নিয়ে নতুন সংসার শুরু করবেন বলে। একটি বেসরকারি সংস্থা ভালো চাকরি পেলেন তিনি। কিন্তু যখন নতুন করে জীবন শুরু করবেন বলে সব কিছু গোচাচ্ছেন তখন বুঝতে পারলেন কোথায় যেন একটা বড় সমস্যা রয়েছে। বুঝতে পারলেন মেয়ের আচরণের অস্বাভাবিকতা।
শিউলি বলেন, ‘দীর্ঘদিন স্বামীর বাড়ির লোক আমার সম্পর্কে আমার মেয়েকে শুনিয়েছে নানা নেতিবাচক কথা। যার ফলে মেয়ে আমাকে একদম পছন্দ করে না, এমনকি তাকে আমার সম্পর্কে যা কিছু খারাপ কথা বলা হয়েছে সব সে বিশ্বাস করে’।
তিনি বলেন, ‘যখন আমি এটা বুঝলাম তখন মনে হল জীবনে তো আমার আর কিছুই থাকলো না’। তারপরেও মন শক্ত করলেন, মেয়েকে নিয়ে গেলেন মনঃচিকিৎসকের কাছে। সাথে অন্যান্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেন তিনি। মেয়ের আচরণের অস্বাভিকতা এখন কিছুটা কম হলেও পুরাপুরি স্বাভাবিক নয়।
শিউলি বলেন, মেয়ের পড়াশোনা, তাকে সময় দেয়া, আমার চাকরি এসব সব কিছু নিয়ে আমার সংসার’। আমার ঐশ্বর্য নেই কিন্তু আমার এখন কোনো অভাব নেই।’(বিবিসি)
বিবার্তা/জাহিদ