ভালবাসার টানে মানুষ কত কি-ই না করে। প্রথমে ভাললাগা তারপর ভালবাসা। ভালবাসাই এক সময় রূপ নেয় প্রেমে। এমনটাই ঘটেছে একজন রেডিও আরজের জীবনে। ছোটবেলা থেকেই গুছিয়ে কথা বলা, কবিতা আবৃত্তি, বিতর্ক অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা, যে কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করতে ভীষণ ভাললাগতো তার। সে ভাললাগা এক সময় পরিণত হয় ভালবাসায়। হৃদয়ে স্থান করে নেয় সংস্কৃতিপ্রেম। সে প্রেমের টানেই আসেন রেডিও আমার ৮৮.৪ এফএম-এ। বলছিলাম রেডিও আরজে নাইমা আনোয়ারের কথা।
বুধবার সকালে তার সাথে আড্ডা জমে রাজধানীর গুলশান-১ রেডিও আমার ৮৮.৪ এফএম-এর অফিসে। জীবনের নানান দিক নিয়ে কথা বলেন বিবার্তা২৪.নেটের নিজস্ব প্রতিবেদকের সাথে। তার বর্ণাঢ্য জীবনের গল্প জানাচ্ছেন উজ্জ্বল এ গমেজ।
বিবার্তা২৪.নেট: রেডিও আরজে হওয়ার গল্পটা জানতে চাই।
নাইমা আনোয়ার: ছোটবেলা থেকেই গুছিয়ে কথা বলা, কবিতা আবৃত্তি, বিতর্ক অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা, যে কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা এগুলো আমার ভাললাগার জায়গা ছিল। এগুলোকে আমি মনে প্রাণে ভালবেসে ফেলি। স্কুল পর্যায়ে আরো সুযোগ হয় এগুলোর সাথে আরো মিশে যাওয়ার। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও করেছি সব। তারপরে সে ভালবাসার টানেই আসা আমার রেডিও আরজে হিসেবে কাজ করতে।
বিবার্তা২৪.নেট: আরজে হিসেবে এটাই কি প্রথম কাজ না আগে কোথাও করেছেন?
নাইমা আনোয়ার: আগে সেটা করেছি সেটা চাকুরি বলা যাবে না। বাংলাদেশ বেতারের যুবতরঙ্গ দিয়ে আমার কাজ শুরু। বিটিভিতে বিতর্ক, উপস্থিত বক্তৃতা অনুষ্ঠানগুলো করতাম। এর পরে মোহাম্মদপুরে প্রিপারেটরি স্কুলে স্টুডেন্টদের বিতর্ক বিষয়ে ক্লাস নিয়েছি। সেখানে আমার সাথে কয়েকজন বান্ধবীও ছিল। ২০০৭ সালে আমি রেডিও আমার ৮৮.৪ এফএমএ যোগ দেই।
বিবার্তা২৪.নেট: আপনি কি ধরনের অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন?
নাইমা আনোয়ার: আগে করতাম আমার ছুটির সকাল। প্রতি শুক্রবার অনুষ্ঠানটা করতাম। বিষয় ছিল ছুটির দিনে কে কি করছে। কেমন করে ছুটির সকালটা কাটাচ্ছে। যে লেখক সে লিখছে। যে গায়ক সে গান গাইছে। এ রকম একেকজন একেকভাবে সকালটা কাটাচ্ছে। এগুলো নিয়ে গান হতো, অাড্ডা হতো। আর এখন করছি- ‘আমার ঘর আমার বাইরে’। এখানে একজন পুরুষ ও নারীর প্রতিদিনকার জীবনে যা যা দরকার হয় সবই এখানে আছে। অনুষ্ঠানটি প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত।
বিবার্তা২৪.নেট: প্রিয় আরজে কারা?
নাইমা আনোয়ার: রেডিও আমার ৮৮.৪-এর পরিবারের সব আরজেই আমার প্রিয়। সবার অনুষ্ঠান আমার ভীষণ ভাললাগে। এছাড়াও রেডিও ফুর্তির আরজে অপু, সাদিয়া ও রাসেলকে আমার অনেক ভাল লাগে। তাদের কথা বলার ঢং, অনুষ্ঠান পরিচালনার স্টাইল আমাকে মুগ্ধ করে।
বিবার্তা২৪.নেট: একই সাথে চাকুরি ও সংসার সামলান কিভাবে?
নাইমা আনোয়ার: যারা কোনো চাকুরি করে তাদের সংসার আর চাকুরি দুটা এক সাথে সামাল দিতে একটু কষ্টই হয়। আমার একমাত্র ছেলে। ছেলের বয়স ৪+ বছর। নাম মুনতাকা হক আয়ান। আমার স্বামী সংসার আগে। তারপরে সব কিছু। স্বামী সন্তানকে সময় দিয়ে অন্য কাজ করি। আমার নিজের গড়া সংসারে কাউকে দিয়ে কাজ করাতে পছন্দ করি না। আমি অনেক খুতখুতে স্বভাবের। সংসারের সব কাজ নিজের হাতে করতে ভালবাসি।
বিবার্তা২৪.নেট: আপনার পরবর্তী পরিকল্পনা কি?
নাইমা আনোয়ার: যারা রেডিওতে কাজ করছে সবার জীবনকে নিয়েই কিছু না কিছু পরিকল্পনা থাকে। আমারও আছে। সবাই যেমন দীর্ঘদিন কাজ করার পরে অনুষ্ঠান প্রোডিউসার হতে চায়। আমি চাই ২০২০ সালের মধ্যে নিজেই একটা প্রকাশনী করতে। আমার স্বামী লেখক, কবি, কথা-সাহিত্যিক ও সাংবাদিক। তার ধ্যান-জ্ঞান, লেখালেখি নিয়ে। আমিও লেখালেখি করতে পছন্দ করি। তাই দু’জনে মিলে একটা প্রকাশনী করার ইচ্ছে।
বিবার্তা২৪.নেট: আপনার ব্যস্ততার মাঝেও মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য বিবার্তা২৪.নেটের পরিবারের সকলের পক্ষ থেকে জানাই কৃতজ্ঞতাপূর্ণ ধন্যবাদ।
নাইমা আনোয়ার: আমার জীবনের গল্প আপনাদের নিউজ পোর্টালে প্রকাশ করার জন্য সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
বিবার্তা/উজ্জ্বল/মহসিন