আমরা নিরপেক্ষ নই বরং মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পক্ষে

আমরা নিরপেক্ষ নই বরং মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পক্ষে
প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০১৫, ১৫:২৪:২৯
আমরা নিরপেক্ষ নই বরং মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পক্ষে
আ.ফ.ম রিয়াজ উদ্দীন মানিক
প্রিন্ট অ-অ+
আমি অত্যন্ত সাদামাটাভাবে বিষয়টাকে তুলে ধরতে চাই। নিরপেক্ষতা বলতে আসলে আমরা কি বুঝি? নিরপেক্ষতা হল এমন একটি অবস্থান যেখানে পক্ষপাতিত্ব করার কোনো সুযোগ থাকে না। আমাদের সমাজে নিরপেক্ষতাকে পজিটিভ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু মোটা দাগে আমার প্রশ্ন হল নিরপেক্ষতা কি আসলেই পজেটিভ কোন সাইন বহন করে কিনা? নিরপেক্ষতা এড়িয়ে যাবার কোনো মন্ত্র কিনা তা নিয়ে আমার প্রশ্ন জাগে। প্রশ্ন জাগে যে নিরপেক্ষতার চাদড় মুড়ি দিয়ে আসলে আমরা আমাদের কোন লজ্জা ঢাকার চেষ্টা করছি কিনা? আচ্ছা ধরুন রাস্তায় আমার বোনকে কয়জন বখাটে মিলে ইভটিজিং করল। সেটার প্রত্যক্ষদর্শী আপনি।তখন আমার বোন পুলিশে অভিযোগ করল। যথারীতি পুলিশ আসল। প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে আপনার কাছে পুলিশ জানতে চাইলো আসলে কি ঘটেছিলো। আপনি চুপ থাকলেন। কারণ আপনি কোনো পক্ষেরই না। আপনি মহান, আপনি নিরপেক্ষ। আল্লাহ না করুন, অন্য আরেকদিন ঠিক একই ঘটনা আপনার বোনের সাথে হল। যথারীতি আমি প্রত্যক্ষদর্শী এবং পুলিশ আসার পর সেদিন যদি আমি নিরপেক্ষ থাকি এবং আমার এই তথাকথিত নিরপেক্ষতার কারণে যদি ঐ বখাটেরা আপনার আমার সামনেই দাঁত বের করে হাসতে হাসতে চলে যায়। তখন কি মানে থাকল মানবিকতার বলুন?
 
কথাগুলো এইজন্য তুললাম যে আমরা এই প্রজন্মের প্রতিনিধি। আমরা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। তবে সেই মুহূর্তগুলো অনুভব করতে পারি। কেন পারি জানেন? কারণ আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি আমি মোটেও নিরপেক্ষ নই। আমি অবশ্যই স্বাধীনতার পক্ষে। খুব অবাক লাগে যখন দেখি স্বাধীনতার প্রশ্নেও আমরা নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করি। আমি মনে করি নিরপেক্ষতা বলে পজিটিভ কিছু নেই। আপনি যতই নিরপেক্ষ থাকেন সেটা কোন না কোন ভাবে কারও পক্ষেই যাবে।
 
ইস্যু যখন হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন কিসের নিরপেক্ষতা?
 
ইস্যু যখন হবে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা তখন কিসের নিরপেক্ষতা?
 
ইস্যু যখন হবে 'জয় বাংলা' স্লোগান তখন কিসের নিরপেক্ষতা?
 
ইস্যু যখন হবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তখন অবশ্যই আমরা তরুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হয়ে নিরপেক্ষ থাকতে পারি না, আর থাকাটাও সমীচীন না।
 
এখন আমাদের দেশে এগিয়ে যাওয়ার এই সময়ে যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির মহড়া চলছে তাতে তরুন প্রজন্ম যদি নিরপেক্ষ থাকে তাহলে বিকৃতিকারীদের দৌরাত্ব বেড়ে যাবে। আমরা ত্রিশ লাখের পক্ষে। আমরা স্বাধীনতার চুয়াল্লিশ বছর পর এসে নতুন করে তিন লাখের পক্ষে না। স্বাধীনতার মাসে আসুন আমরা সবাই মিলে স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান করি। ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা বোনোর ইজ্জতকে শ্রদ্ধা করি। নিরপেক্ষতার বেড়াজাল থেকে নিজেদের বের করে আনি। বুকে হাত দিয়ে, গর্বের সাথে বলি ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জতের প্রশ্নে আমি মোটেও নিরপেক্ষ নই বরং সঠিক ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পক্ষে।
 
পরিচিতি:  শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
 
বিবার্তা/নাজিম
 
 
 
 
 
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com