বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ব বিতর্ক ও সম্ভাবনা

বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ব বিতর্ক ও সম্ভাবনা
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০১৬, ১১:৫৮:৩৯
বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ব বিতর্ক ও সম্ভাবনা
মো. আলাউদ্দিন ভুঁইয়া
প্রিন্ট অ-অ+
ইরাক ও সিরিয়ার ভূখণ্ড দখল করা ইসলামিক স্টেটের (আইএস) স্বঘোষিত ‘খিলাফত’ ক্রমান্বয়ে দুর্বলতর হচ্ছে। দুই বছর আগে ইরাক ও সিরিয়া মিলে আইএসের দখলকৃত ভূখণ্ডের পরিমাণ ছিল গ্রেট ব্রিটেনের সমান। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার যৌথ আক্রমণে সে ‘খিলাফত’ ২২ শতাংশ হ্রাস পেয়ে এখন অনেকটাই সংকুচিত।
 
ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস ছত্রভঙ্গের ফলে বিশ্ব জুড়ে আইএসের ‘স্পিলওভার ইফেক্টে’র সম্ভাবনা বেড়ে গেছে। ইতিমধ্যেি ইরাক ও সিরিয়ার নিকটতম প্রতিবেশী বেশিরভাগ রাষ্ট্র আইএসের সম্প্রসারিত চারণভূমির আওতায়ভুক্ত হয়েছে। মধ্যলপ্রাচ্যেের দেশগুলোতে বিস্তৃতির পাশাপাশি আইএস এখন উত্তর আফ্রিকার মিসর, লিবিয়া, জর্ডান, আলজেরিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছে। 
 
আইএসের বর্তমান সম্প্রসারণ নীতিতে মধ্য প্রাচ্যফ ও উত্তর আফ্রিকার বাইরে সর্বোত্তম পোষকদেহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইন্দোনেশিয়া পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র ও মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে বিপুল সংখ্যনক নির্যাতিত মুসলমান রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ মুসলিম সংখ্যানগরিষ্ঠ রাষ্ট্র, ভারত মুসলিম সংখ্যানগরিষ্ঠ না হলেও সেখানে মুসলমানদের সংখ্যাে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। 
 
মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্র হলেও ইন্দোনেশিয়ায় সকল ধর্মেরই (ইসলাম, হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম, প্রোটেস্ট্যা্নিজম, ক্যা থলিসিজম ও কনফুসিয়ান ধর্ম) রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি রয়েছে। ওদের সংবিধানে বলা হয়েছে, ‘ধর্ম নির্ধারণ ও পালনের ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যিক্তি স্বাধীন।’ কোনো রাষ্ট্র যদি বিশেষ কোনো ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা না করে তবে সে রাষ্ট্র যেমন ধর্মনিরপেক্ষ তেমনিভাবে কোনো রাষ্ট্র যদি তার সকল ধর্মকে সমানভাবে স্বীকৃতি দেয় তবে সে রাষ্ট্রও একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। এমন একটি রাষ্ট্রকে আইএস পোষকদেহ হিসেবে সহসা বিবেচনা করবে না। মিয়ানমারের নির্যাতিত মুসলিমদের মধ্যে্ আইএসের ঘাঁটি তৈরি করতে চাওয়া যুক্তিসঙ্গত হলেও মিয়ানমার সরকারের কঠোর মনোভাবের কারণে সেখানে ধর্মভিত্তিক সংগঠন তৈরির সম্ভাবনা প্রায় শুন্যেকর কোঠায়। 
 
বাকি থাকে দক্ষিণ এশিয়ার পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও ভারত। পাকিস্তান ও আফগানিস্তান ইসলামী জঙ্গিদের স্বর্গভূমি। আল-কায়দা, তালেবান, লস্কর-ই-তৈয়েবা, হরকাতুল মুজাহিদিন, আইএস কি নেই সেখানে! পাকিস্তান বা আফগানিস্তানে আইএসের মতো কোনো একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আধিপত্যা কায়েম ‘মুশকিল হি নেহি, না মুনকিন হ্যা য়’। ওরা এখন জঙ্গিবাদ আমদানি নয়, রপ্তানি করে। ভারতের হিন্দু সংখ্যাবগরিষ্ঠতা আইএসের সম্প্রসারণনীতি অন্য তম বাধা। সর্বোপরি, ভারতীয়দের জাতীয়তাবোধ ধর্মের অনেক উপরে। ধর্মে শতধা বিভক্ত ভারত জাতীয়তাবোধে বরাবরই একাট্টা। 
 
বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ত্ব বলতে যা বোঝাতে পারে তা হলো- এক. বাংলাদেশে আইএসের সক্রিয় সদস্যদের অনুপ্রবেশ ও স্থানীয় জঙ্গি গোষ্ঠীদের সাথে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ। সিরিয়া বা ইরাকে আইএসের সহিংতা, মিসর বা প্যা রিসে হত্যাাযজ্ঞের ভয়াবহতা পর্যালোচনা করলে আমরা আইএসের আক্রমণের ক্ষমতা, তীব্রতা, প্রচণ্ডতা সম্পর্কে যে ধারণা পাই তার সাথে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ‘টার্গেট কিলিং’য়ের যথেষ্ট বৈসাদৃশ্যল রয়েছে। এ ধরণের হত্যাণয় আইএসের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে এমন ধারণা করা অনেকটাই অযৌক্তিক।   
 
দুই. সমমনা কোনো বাংলাদেশী উগ্র ধর্মীয় জঙ্গি গোষ্ঠীকে আইএস স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি ও সহযোগিতা প্রদান করতে পারে। স্বীকৃতিদান গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় নয়। কালকে আইএস ‘ওলামা লীগ’কে স্বীকৃতি প্রদান করলে কি ‘ওলামা লীগ’ তাদের স্থানীয় প্রতিনিধি হয়ে যাবে? আইএসের সহযোগিতা হতে পারে আর্থিক, সামরিক বা প্রশিক্ষণভিত্তিক। বাংলাদেশের জঙ্গি হত্যাহকাণ্ডগুলোতে চাপাতির ব্যা পক ব্যরবহার এদেশে আইএসের অস্তিত্বকে বারংবার প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। যে আইএস যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সের কঠোর নিরাপত্তাবলয় ভেঙে আধুনিক মারণাস্ত্র ব্যিবহার করে বর্বরোচিত হত্যা্কাণ্ড চালানোর ক্ষমতা রাখে, যে আইএসের কাছে রাশিয়ার অত্যােধুনিক বিমান ভূপাতিত করার অস্ত্র থাকে, সেই আইএস তাদের বাংলাদেশী দোসরদের হাতে কেবল এক চাপাতি তুলে দিল! নাহ, কোনোভাবে আইএসের এ দীনতাকে মেনে নেয়া যায় না।
   
তিন. উগ্রপন্থী প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে আইএস প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সুবিধা প্রদান করতে পারে। এ সকল প্রবাসী দেশে ফিরে স্থানীয় উগ্র সংগঠনগুলোর সাথে আইএসের সংযোগ সাধন করতে পারে। বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে সিঙ্গাপুরে আল-কায়েদা ও আইএসের ২৭ বাংলাদেশী সদস্য্কে আটক করা হয়েছে। দেশটার নাম সিঙ্গাপুর না হয়ে ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া বা লেবানন হলে এই সাতাশ জনকে আল-কায়েদা বা আইএসের সদস্য৭ হিসেবে মেনে নিতে সহজ হতো। সিঙ্গাপুর নিয়ে আইএসের কোনো মাথাব্যথা নেই, নিরাপত্তার বলয়ে ঘেরা ক্ষুদ্র এই দ্বীপ রাষ্ট্রে আইএসের সক্রিয় কার্যক্রম থাকার প্রশ্নই ওঠে না। 
 
ঘটনাদৃষ্টে মনে হয়, এরা বাংলাদেশের জঙ্গিবাদী কোনো দলের সদস্য্, যারা অবস্থা বেগতিক দেখে বিভিন্ন সময়ে সিঙ্গাপুরে আশ্রয় নিয়েছিল। তারা ক্রমান্বয়ে একজোট হয়ে দেশে ফিরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করতে চেয়েছিল। এরা আইএসের নয়, আমাদেরই ‘সূর্য’ সন্তান। বিলেতফেরত এ ধরণের উগ্রপন্থী প্রবাসীদের মাধ্যরমে দেশে আইএসের ভাবাদর্শের বিস্তার লাভের আশঙ্কা একটি স্বাভাবিক অনুমান। 
 
চার. বাংলাদেশী বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন স্বপ্রণোদিত হয়ে আইএস বা আল-কায়দার মতো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের পরিচয় ব্য্বহার করতে পারে। আইএসের সাথে তাদের প্রত্যইক্ষ কোনো সংযোগ না থাকলেও কৌশলগত কারণে আইএসও এ দাবিকে স্বীকার করতে পারে। বর্তমান পত্রপত্রিকায় যে কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন হিসেবে যে কয়টি নাম সচরাচর দেখা যায় তা হলো- হিফাজত-এ-ইসলাম, হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ (হুজি), হিযবুত তাহরীর, আনসারুল্লা বাংলাটিম, জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি), শাহাদাৎ-ই আল-হিকমা, হিজবুত তাওহীদ, কালেমা-ই জামাত, হিযবুল মাহাদী, জামায়েতুল মুসলেমিন ও ইসলামী দাওয়াতী কাফেলা। 
 
ইতিমধ্যেি আনসারুল্লা বাংলাটিমের সাথে আল-কায়দার নাম জড়িয়েছে, বাংলাদেশে আইএসের কার্যক্রম পরিচালনা করছে বা করবে এমন দু’চার জনের নামও শোনা গেছে। প্রসঙ্গত, উপরিল্লিখিত কোনো সংগঠনই পৃথক কোনো দল নয়, এরা একটি চিহ্নিত দলের গুটিকতক ভগ্নাংশ মাত্র। প্রয়োজনে এরা নতুন নতুন নামে, নতুন নতুন রূপে আবির্ভূত হচ্ছে। 
 
এরা আল-কায়দা, আইএসের নাম ব্যাবহার করলে একদিকে যেমন জাতে উঠবে, অন্যনদিকে তাদের মাতৃসম কাণ্ডটি থাকবে সুরক্ষিত, নিষ্কলঙ্ক। সর্বোপরি, নির্বাচনের সময় নিজেদের পাল্লাটা তো ভারী রাখতে হবে। 
 
পাঁচ. বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের স্থানীয় সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ডকে নিজেদের বলে দাবি করে আইএস তাদের আন্তর্জাতিক প্রচারণা চালায়। এ ধরনের প্রচারণা জণসাধারণের মনে আইএসের শক্তি সম্পর্কে এক ধরনের মিথ তৈরিতে সহায়তা করে। গত ১৮ মাসে বাংলাদেশে জঙ্গিদের হাতে নিহত ৪৭ জনের মধ্যেে ২৮ জনের মৃত্যুের দায় স্বীকার করেছে আইএস এবং ৮ জন হত্যা৭র দায় নিয়েছে আনসার আল ইসলাম। 
 
যে দায় নিলে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই সে দায় নিতে বাধা কোথায়? যুক্তরাষ্ট্রের ওরল্যােন্ডে হত্যা্কাণ্ডের ক্রেডিটটা আরেকটু হলেই আইএস নিয়ে নিতো, ভাগ্যিবস মতিনের স্ত্রী এটাকে স্বামীর জন্যড বরাদ্দ রেখেছিলো। 
 
ভৌগোলিকভাবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংযোগস্থলে অবস্থিত বাংলাদেশ পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম মুসলিম ও সপ্তম জনবহুল রাষ্ট্র। আইএস বা আল-কায়দার মতো কোনো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন এখানে ঘাঁটি গড়ে তুলতে পারলে একদিকে তারা অতি অল্প পরিসরে বিপুল সংখ্যপক মুসলিম জনগোষ্ঠীকে ধর্মীয় বিষাক্ত ভাবাদর্শে দ্রুত উদ্বুদ্ধ করার সুযোগ পাবে, অন্য‍দিকে বাংলাদেশ থেকে ভারত ও মিয়ানমারের মুসলমানদেরকে একই ভাবাদর্শে সংক্রমিত করা সহজতর হবে। 
 
ভুলে গেলে চলবে না, আমরা চাঁদে মানুষের মুখ দেখতে পাই। আমাদের ‘শস্যেরর চেয়ে টুপি বেশি’। এখানে লজিকের চেয়ে ম্যা জিকের ক্ষমতা বেশি বলে বিজ্ঞানীর চেয়ে ‘বাবা’ বেশি; ওষুধের চেয়ে ‘ফুঁ’ এ আস্থা বেশি বলে ডাক্তারের চেয়ে ‘স্বপ্নে পাওয়া’ কবিরাজ বেশি। এখানে যুক্তির তীক্ষ্মতার চেয়ে চাপাতির ক্ষিপ্রতা বেশি বলে ধার্মিকেরা ধর্মে সোচ্চার, ধর্মান্ধে নির্বিকার। 
 
লাদেন যখন টুইন টাওয়ার হামলা করেছিল, তখন আমাদের গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েরা একটা স্লোগান দিতো, ‘আমরা সবাই লাদেন হবো, টুইন টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেব’। তখন বুঝতে পারিনি, এখন বুঝি, এটা কোনো সাধারণ স্লোগান নয়, এ আমাদের ধর্মান্ধতার প্রতিধ্বনি।
 
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রের চেয়ে ধর্ম অনেক বেশি শক্তিশালী। আন্দোলনের মুখে ধর্মভিত্তিক শিক্ষা পদ্ধতির সংস্কার সম্ভব হয়নি, রাষ্ট্রধর্ম পরিবর্তনে পিছুটান দিতে হয়েছে, ধর্মনিরপেক্ষতা খাতা-কলমে প্রতিষ্ঠা পায়নি, ধর্মীয় বাকস্বাধীনতা নাস্তিকতার গ্যাঁ ড়াকলে ফেঁসে গেছে। আইএসের মতো যেকোনো আন্তর্জাতিক ধর্মীয় সন্ত্রাসী সংগঠনের বিস্তারে এর চেয়ে উত্তম কোনো চারণভূমির সন্ধান সত্যি্ই কি দুর্লভ নয়?
 
জঙ্গি সংগঠনগুলোতে নেতৃত্বের চেয়ে মতাদর্শ, ভাবাদর্শ অনেক বেশি শক্তিশালী। ওসামা বিন-লাদেনের মৃত্যুয়তে আল-কায়দা শেষ হয়ে যায়নি, ‘বাংলা ভাই’য়ের ফাঁসিতে জেএমবিও নিশ্চিহ্ন হয়নি। এ ধরনের আদর্শ মন্ত্রপূত বীজের মতো, আমাদের ধর্মান্ধতায় ওরা বারংবার পুনরুজ্জীবিত হবে। আল-কায়দা, আইএসের অস্তিত্ত্ব থাক বা না থাক বাংলাদেশে এদের মতাদর্শ, ভাবাদর্শ মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে।  
 
যুদ্ধটা এখন আর জঙ্গিদের বিরুদ্ধে নয়, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। আটক করে, বিচার করে, শাস্তি দিয়ে হয়তো জঙ্গিকে রুখে দেয়া সম্ভব, চিরতরে জঙ্গিবাদ দমন করা যায় না- ‘শহীদের জন্য  খোলা জান্নাতের দরজা’ বন্ধ করা এতটা সহজ নয়। গণআটক হিতে বিপরীত হতে পারে, পাশাপাশি কোনো বিকল্পও প্রয়োজন। 
 
লেখক: কানাডায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (রাজনৈতিক)
 
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com