সাতক্ষীরা জেলার অন্যতম একটি উপজেলা কালীগঞ্জ। এ উপজেলারই একটি গ্রাম নলতা। শান্ত, শ্যামল ও সৌম্য এ গ্রামটি আজ দেশ-বিদেশে ব্যাপকভাবে পরিচিত। এ গ্রামেই ১৮৭৩ সালের ডিসেম্বর মাসে জন্মেছিলেন খান বাহাদুর আহসান উল্লাহ। আর মৃত্যুবরণ করেন ১৯৬৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। তাকে তার জন্মস্থান নলতায় সমাহিত করা হয়। পরে তার সমাধিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে আজকেরখান বাহাদুর আহসান উল্লাহ সমাধি কমপ্লেক্স বা নলতা শরীফ।
প্রায় ৪০ বিঘাজমির ওপর গড়ে ওঠা এই কমপ্লেক্সের মধ্যে আছে মাজার, মসজিদ, অফিস, লাইব্রেরি, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, অতিথিশালা, পুকুর ও বেশকিছু উন্মুক্ত জায়গা। একটি উঁচুমাটির ঢিবির মতো দেখতে, যার চারদিকের ঢালে রয়েছে নজর কাড়া ফুলের বাগান। এ বাগানের শীর্ষে রয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন সমাধিসৌধ। এর নির্মাণ শৈলী ও নির্মাণ উপকরণ অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও মূল্যবান।
সমাধি সৌধে ওঠার জন্য তিন দিকে ৩টি সিঁড়ি রয়েছে। তবে দক্ষিণের সিঁড়িটি বেশ প্রশস্ত এবং আকর্ষণীয়। মোট ৯টি গম্বুজ দ্বারা সৌধটি সুশোভিত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় গম্বুজটি বেশ বড় এবং দর্শনীয়। খানবাহাদুর আহসান উল্লাহ মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে এই সমাধিকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর ৮, ৯ ও ১০ ফেব্রুয়ারি এখানে বার্ষিক ওরস মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
তখন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ভক্ত-অনুরাগীরা ছুটে আসে নলতা শরীফে। ওরজের তৃতীয় দিন শেষে ওরজে আগতদের খাবার দেয়ার মাধ্যমে ওরজ সমাপ্ত করা হয়। এই ওরজ উপলক্ষে নলতায় মেলাও বসে। আর এই মেলা দেখতে ছুটে আসেন বিভিন্ন জায়গার মানুষ। কেননা, এখানে দেশ-বিদেশের হরেক রকম জিনিস বিক্রয় করা হয়।
বর্তমানে নলতা শরীফ সাতক্ষীরা তথা বাংলাদেশের একটি দর্শনীয় স্থান। প্রতি রমজানে এই নলতা শরীফ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইফতার মাহফিল আয়োজন করা হয়। এখানে যেহেতু দেখার অনেক জিনিস রয়েছে, তাছাড়া খান বাহাদুর আহসান উল্লাহর সমাধি, তাই একবার হলেও এ দেশের প্রত্যেকের জায়গাটি ঘুরে আসা উচিৎ।
বিবার্তা/জাকিয়া/যুথি