বিএনপির সাত জন যুগ্ম-মহাসচিবের মধ্যে নতুন কমিটিতে ইতোমধ্যেই পদ পেয়েছেন দুজন। এর মধ্যে রুহুল কবির রিজভী আহমেদ পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব। অপরদিকে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন আগেও যুগ্ম-মহাসচিব ছিলেন। তিনি আবারো যুগ্ম-মহাসচিবের পদ পেয়েছেন। বাকি রয়েছেন ৫ জন। এই পাঁচ জনের ভাগ্যে কী হতে যাচ্ছে তা সঠিক করে বলা না গেলেও তারা আশা করছেন পদোন্নতি পাবেন।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ১৯ মার্চ বিএনপির ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবার পর চতুর্থ দফায় ১৮ এপ্রিল ২০জন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
কাউন্সিলের ১০ দিন পর ৩০ মার্চ মির্জা ফখরুলকে ভারমুক্ত করে মহাসচিবের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। একই সাথে সিরিয়ালে সবশেষে থাকা ৭ নম্বর যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ঘোষণা করে নেতাকর্মীদের চমক দেখায় বিএনপি। সেদিন বিএনপির কোষাধ্যক্ষ হিসেবে শিল্পপতি মিজানুর রহমান সিনহার নাম ঘোষণা করা হয়। যদিও সিনহা আগের কমিটিরও কোষাধ্যক্ষ ছিলেন।
তৃতীয় দফা ৯ এপ্রিল ১৫ জন যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। চতুর্থ দফা ১৮ এপ্রিল দলের নয়াপল্টন কার্যালয়ে ২০ জন সহ সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে বিএনপি।
এ মনোনয়নের ফলে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মহাসচিব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব, কোষাধ্যক্ষ, যুগ্ম-মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে এই পর্যন্ত ৪০ জনের নাম ঘোষণা হলো।
কাউন্সিলের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বেগম খালেদা জিয়া চেয়ারপারসন এবং তারেক রহমান সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
দলের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, প্রথমে দলের স্থায়ী কমিটির নাম ঘোষণা দেয়ার কথা থাকলেও স্থায়ী কমিটি করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন বেগম জিয়া। তিন পদের বিপরীতে অন্তত ১৫ জন নেতা এ পদে যেতে আগ্রহী। কাকে বাদ দিয়ে কাকে রাখবেন এ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন বিএনপি প্রধান। যে কারণে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের চিন্তা বাদ দিয়ে প্রথমে যুগ্ম মহাসচিবের নাম ঘোষণা করা হয়।
নতুন যুগ্ম মহাসচিবের নামের তালিকায় মাহবুব উদ্দিন খোকন ছাড়া সবাই নতুন। এতে বাদ পড়া যুগ্ম মহাসচিবদের অনেকেই শঙ্কায় রয়েছেন। বাদ পড়া কয়েকজন যুগ্ম মহাসচিব বিবার্তার সাথে আলাপকালে বলেন, বিগত দিনে আমাদের শ্রম ও ত্যাগ নেত্রী (খালেদা জিয়া) অবশ্যই মুল্যায়ন করবেন। এ পর্যন্ত বাদ পড়া যুগ্ম মহাসচিবরা হলেন, আমান উল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাহজাহান এবং সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
বিএনপির সূত্রে জানা গেছে আমান উল্লাহ আমান এবং বরকত উল্লাহ বুলুকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে। মিজানুর রহমান মিনুকে উপদেষ্টা এবং মোহাম্মদ শাহজাহান ও সালাউদ্দিন আহমেদকে দলের সর্ব্বোচ্চ ফোরাম স্থায়ী কমিটিতে আনা হচ্ছে।
সদ্য বিদায়ী যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান বিবার্তাকে বলেন, বিএনপি একটি বড় দল। বাংলাদেশে যতগুলো রাজনৈতিক দল আছে তার মধ্যে বিএনপিতে সবচেয়ে বেশি গণতন্ত্র চর্চা হয়। নিজের পদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনীতি করতে গেলে দলের পদ পদবীতে পরির্বতন আসবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আমি হতাশ নই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাকে যেখানে রাখবেন সেখানেই আমি সন্তুষ্ট। আমি শহীদ জিয়ার কর্মী এটাই আমার বড় পরিচয়।
গত কমিটির আরেক যুগ্ম মহাসচিব নাম প্রকাশ না করার না শর্তে বিবার্তাকে বলেন, কিছুটা শঙ্কা তো কাজ করছেই। জানি না নেত্রী কোন জায়গায় রাখেন। তবে দলে আমার যে অবদান তাতে আমি পদোন্নতি আশা করি।
বিবার্তা/বিপ্লব/কাফী