আজ ২৪ এপ্রিল। সাভারের রানা প্লাজা ধসের তিন বছর। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার বারাই হাট এলাকার ৩ বছর পূর্বে সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দু’পা হারানো গার্মেন্ট শ্রমিক রেবেকা খাতুন কেমন আছেন!
আজ রবিবার সকাল ১০টায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার বারাই হাট এলাকার চেয়ারম্যান পাড়ার সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দু’পা হারানো গার্মেন্ট শ্রমিক রেবেকা খাতুনের স্বামীর বাড়িতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রেবেকা খাতুন দুই বছরের কন্যা সন্তানকে পাশে রেখে অনেক কষ্ট করে চুলায় রান্না করছেন।
রেবেকা রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় আহত শ্রমিকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিদিন হাসপাতালে ছিলেন। ১০ মাসের মতো। দু পায়ে মোট আটবার অস্ত্রপচার হয়েছে। ওই দুর্ঘটনায় তিনি তার মা সহ পরিবারের আরো দুজনকে হারিয়েছেন।
রেবেকা খাতুন বলেন, রানা প্লাজা ধসের ঘটনার তিন বছর হয়ে গেলেও এখনো দুঃসহ স্মৃতি তাড়া করে ফেরে তাকে। রানা প্লাজা ধসের দুই বছর আগে পছন্দ করে মোস্তাফিজুর রহমানকে বিয়ে করেন। তবে রানা প্লাজা ধসে ফিজার আর রেবেকার সুখের সংসার লন্ডভন্ড হয়ে যায়। রানা প্লাজার ইট-পাথরের স্তূপে হারিয়ে যান মা চান বানু। মারা যান দাদি ও ফুফু।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর তাঁর জ্ঞান ছিল না। দুই দিন পর জ্ঞান ফেরে। তখন চিৎকার করতে থাকলে কয়েকজন উদ্ধারকর্মী কাছে আসেন। কিন্তু পায়ের ওপর ভীম থাকায় উদ্ধার করতে পারেন না। এ সময় রেবেকা উদ্ধার কর্মীদের তাঁর স্বামীর মুঠোফোন নাম্বার দেন। পরে তাঁর স্বামী এসে উদ্ধারকর্মীদের সহায়তায় তাঁকে উদ্ধার করেন। ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে দীর্ঘ এক বছর রেবেকাকে চিকিৎসা নিতে হয়। বাম পা কোমর পর্যন্ত ও ডান পা গোড়ালি পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়েছে।
রেবেকা খাতুন জানান, দুর্ঘটনার পর থেকে সারা শরীর প্রচণ্ড ব্যথা করে। দুই পায়ের হাড় বেড়ে গেছে। ব্যথায় কুঁকড়ে যায় শরীর। টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে পারছি না। পায়ের অপারেশন খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকা পেয়েছেন। সেটি স্থায়ী আমানত হিসাবে ব্যাংকে আছে। সেই স্থায়ী আমানতের টাকা দিয়ে কোনমতে তাদের সংসার চলে।তার দেখাশুনার জন্য তার স্বামী বাহিরে কাজ করতে পারে না। আমার স্বামী আমার প্রস্রাব-পায়খানা পরিষ্কার করা থেকে ঘর সংসারের সব কাজ করে। এখন সরকারিভাবে আমাদের কেউ খোজ নিতে আসে না।
বিবার্তা/মোস্তাফিজুর/জিয়া