রংপুর অঞ্চলে নতুন কৌশল অবলম্বন করে এগোচ্ছে জঙ্গিরা। হিট অ্যান্ড রান পদ্ধতিতে কিলিং মিশন শেষ করে দ্রুত আস্তানা ছাড়ছেন তারা। জঙ্গিদের তৎপরতা বেড়েছে রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও গাইবান্ধা জেলায়। এরা নিত্য নতুন কৌশলে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
জঙ্গিরা তাদের কার্যক্রম চালানোর জন্য কম খরচে বিভিন্ন বাসা বাড়ি ও মেস ভাড়া করে গোপনে মিশন পরিকল্পনা চালাচ্ছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) রংপুর বিভাগের আরও চার জেলা লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও ও নীলফামারীতে অতি গোপনে সাংগঠনিক ভিত্তি গড়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় জনসমর্থন না পাওয়ায় মাথা চাড়া দিয়ে ভিত্তি গড়ে তুলতে পারছেনা তারা।
তবে তারা বিভিন্ন স্কুল কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে সংগঠনের কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছে। গোয়েন্দাদের কাছ থেকে এমন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে, গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী রংপুর বিভাগের আট জেলার এসপি ও ৬০ জন ওসিকে নিয়ে বৈঠক করেন সদ্য যোগদান করা রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক। এসময় বৈঠকে জঙ্গি তৎপরতা ও কার্যক্রম সম্পর্কে ব্যাপক আলোচনা হয়। আর এসব আলোচনায় উঠে আসে ব্যাপক চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া রংপুরে জাপানি নাগরিক হত্যা, কাউনিয়ায় মাজারের খাদেম হত্যা, দিনাজপুরে ধর্ম যাজককে হত্যা, পঞ্চগড়ে মন্দিরের পুরোহিত হত্যা, বাহাই সম্প্রদায়ের নেতাকে হত্যা চেষ্টাসহ বিভিন্ন নাশকতার ঘটনাগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। এ আলোচনায় জঙ্গিদের মিশন সফল করার বিভিন্ন চিত্র ও কোন পদ্ধতি ব্যবহার করে মিশন পরিচালনা করা হচ্ছে তাও উঠে আসে।
গোয়েন্দাদের দেয়া তথ্যর ভিত্তিতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেই সাথে তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের পুলিশি হেফাজতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে অনেক গোপন কৌশল সম্পর্কে তথ্য পেয়েছেন বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়ন্দা কর্মকতা।
তিনি বলেন, জেএমবি মুলত সরকারকে বিশ্বের কাছে হেয় করতে এমন হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। সেই সাথে দেশে জেএমবি নামক সংগঠনটি এখনও সক্রিয় আছে প্রমাণ করতে তাদের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যাতে দেশের মানুষ জেএমবির নাশকতায় ভীত থাকে।
এ বিষয়ে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বিবার্তাকে বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবি নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করছে। তাদের পরিকল্পিত মিশন সম্পর্কে জানতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে পুলিশ। সেই সাথে জঙ্গি তৎপরতা প্রতিহত করতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যে কোন নাশকতা এড়াতে প্রস্তুত তারা।
ডিআইজি আরও বলেন, জঙ্গিরা যাতে গা ঢাকা দিয়ে গোপনে কোন মেস বা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে না পারে সেজন্য পুলিশ বাড়ি বাড়ি ভাড়াটিয়া নিবন্ধন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
বিবার্তা/শেখ মামুন/জিয়া