নাটোরের সিংড়া চামারী ইউনিয়নের বিলদহর বাজার পয়েন্টে আত্রাই নদী পারাপারের জন্য ঐতিহাসিক চলনবিলবাসীর একটি পাকা ব্রিজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের।
৩০টি গ্রামের অবহেলিত মানুষ তাদের চাঁদার টাকায় একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হচ্ছে। ওই এলাকার রমজান আলী নামে এক ব্যক্তি খেয়াঘাট ইজারা নিয়ে এলাকাবাসীর যাতায়াতের জন্য বাঁশের সেতুটি নির্মাণ করেছেন।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জনপ্রতি ৫ টাকা নেয়ার ফলে পারাপার হতে গিয়ে গরিব মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। তাছাড়া অনেক সময় টাকা না থাকলে ইজারাদার খারাপ ব্যবহার করেন তাদের সাথে।
এখানে একটি পাকা ব্রিজ থাকলে কোনো দুর্ভোগ পোহাতে হতো না এলাকাবাসীকে। নদীটির দক্ষিণ ও উত্তর পাশে রয়েছে প্রায় ৩০টি গ্রাম। এসব এলাকার প্রায় ৪০ হাজার খেটে খাওয়া মানুষ চলনবিলে উৎপাদিত ফসল নিয়ে বাঁশের ওই সাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচল করে।
ইজারাদার রমজান আলী বলেন, বর্ষার সময় মানুষ পারাপারের জন্য খেয়া ঘাটে নৌকা থাকে। আর শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত হয়। তখন নদীতে নৌকা চালানো সম্ভব না হওয়ায় প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যায়ে তৈরী ওই বাঁশের সাঁকোটি ব্যবহার করে এলাকাবাসী।
চামারী ইউপির চেয়ারম্যান রাশিদুল ইসলাম বলেন, এলাকার সর্বস্তরের মানুষের কথা বিবেচনায় রেখে ঘাটটি ইজারা নেয়া হয়ে থাকে বার্ষিক ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায়। সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে বাড়তি টাকা আদায় করা হলে ইজারাদারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি জানান।
সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদৎ হোসেন বলেন, বর্ষায় খেয়া নৌকা আর শুকনায় বাঁশের সাঁকোর ওপর ভরসা করেই চলছে এসব গ্রামবাসীর জীবনযাত্রা।
এলাকাবাসী জানান, নদীটিতে পাকা ব্রিজ না থাকায় বর্ষাকালে খেয়া নৌকায় আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবন ঝুঁকি নিয়ে হাজারো শিক্ষার্থী চলাচল করে আসছে। আত্রাই নদীর উত্তর পাশে রয়েছে কলম ও বিয়াস ইউনিয়নসহ বিস্তীর্ণ চলনবিল এলাকা। ওই এলাকার মানুষ আত্রাই নদী পার হয়ে জেলা শহর নাটোরসহ জেলার অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকে।
তাছাড়া কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য পরিবহনেও পোহাতে হয় ভোগান্তি। বিশেষ করে ইরি-বোরো মৌসুমে কাটা ধান বহনকারী গরু ও মহিষের গাড়ি পারাপারে দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) হৃদয়চন্দ্র দাস জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশে ১মাস আগে সেখানকার মাটি পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপির একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী মাও. রুহুল আমিন বলেন, এ এলাকার প্রাণের দাবি সেখানে ব্রিজ। এটি প্রতিমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ছিল। এজন্য ইতোমধ্যে ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ মিলেছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে মাটি পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
বিবার্তা/রাজু/কাফী