দেশেই তৈরি হচ্ছে ‘বহনযোগ্য ইনকিউবেটর’

দেশেই তৈরি হচ্ছে ‘বহনযোগ্য ইনকিউবেটর’
প্রকাশ : ০৬ মে ২০১৬, ২২:১৬:৩০
দেশেই তৈরি হচ্ছে ‘বহনযোগ্য ইনকিউবেটর’
ফারজানা আক্তার
প্রিন্ট অ-অ+
অপরিণত শিশুদের রাখার জন্য ‘বহণযোগ্য ইনকিউবেটর’ দেশেই তৈরি হচ্ছে। এ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে সস্তা ও স্থানীয় কাঁচামাল। এ ইনকিউবেটর নিরাপদ ও  শিশুদের সুস্থতা নিশ্চিতে এতে থার্মাল প্যাড রাখা হয়েছে।
 
তাপমাত্রায় ভারসাম্য রাখতে এতে হাইড্রোজেনেটেড তেলও রাখা হয়েছে। অপরিণত শিশুরা প্রয়োজনীয় শারীরিক তাপমাত্রা উৎপন্ন করতে পারে না, যা সারা বিশ্বে ৫০ শতাংশ নবজাতকের মৃত্যুর কারণ। 
 
বাংলাদেশী ও আমেরিকার বিজ্ঞানীরা মিলে এ এ সৃজনশীল ইনকিউবেটর তৈরি করছেন। তাদের মূল উদ্দেশ্য অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোতে শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা।  
 
সস্তা ও স্থানীয় কাঁচামাল ব্যবহার করে তৈরি এ ইনকিউবেটরে রাসায়নিকভাবে উষ্ণতাবৃদ্ধিকারী প্যাড সংযুক্ত করা হয়েছে, যা প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
 
এটা খুব সহজেই ব্যবহার করা যায়; আবার একই সাথে নিরাপদও বটে। বাণিজ্যিকভাবেও এ প্যাডগুলো পাওয়া যাচ্ছে এবং পেশীসহ বিভিন্ন ধরণের ব্যাথা থেকে মুক্তি পেতে এ প্যাড প্রাপ্তবয়স্করাও ব্যবহার করতে পারেন। 
 
আন্তর্জাতিক ডায়রিয়া নিরাময় ও গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআরবি) বাংলাদেশ শাখার উপপ্রধান পরিদর্শক ও বিজ্ঞানী এম এ কাইয়ুম বলেন, এ পণ্য উৎপাদনে আমাদের সবচেয়ে বড় অবদান হলো সেমি-সলিড হাইড্রোজেনেটেড তেলের ব্যবহার; যা অতিরিক্ত তাপ শুষে নেয় এবং ইনকিউবেটরে শিশুর শরীরের প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা উৎপাদনে সহায়তা করে।
 
জন হপকিন্স ব্লুমবার্গ জনস্বাস্থ্য স্কুলের সহযোগী অধ্যাপক ও প্রধান তত্ত্বাবধায়ক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, এই ইনকিউবেটরকে শিশুদের হাইপোথারমিয়া (বিপদজনকভাবে শারীরিক তাপমাত্রা কমে যাওয়া) প্রতিরোধে সমাধান হিসেবে দেখা হচ্ছে। অপরিণত শিশু হিসেবে জন্ম নেয়া শিশুর শরীরে চর্বি কম থাকে; ফলে তারা নিজেদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা উৎপাদন করতে সক্ষম হয় না।
 
সারা বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ১৫ মিলিয়ন শিশু অপরিণত অবস্থায় (৩৭ সপ্তাহের আগেই) জন্মগ্রহণ করে এবং এ হার বাড়ছে। অপরিণত অবস্থায় জন্মগ্রহণই সারা বিশ্বে ৫০ শতাংশ নবজাতক মৃত্যুর কারণ; যার অধিকাংশই ঘটে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। 
 
বিজ্ঞানী এম এ কাইয়ুম আরো বলেন, অপরিণত অবস্থায় জন্মের পর নবজাতককে হাইপোথারমিয়া থেকে রক্ষা করা অন্যতম বড় একটা চ্যালেঞ্জ।
 
আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানীদের সহায়তায় জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ও জর্জ ম্যাশন ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে এ ইনকিউবেটর তৈরি করেছে। এতে অনুদান দিয়েছে বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।
 
অনুদান এসেছে সুইডিশ আন্তর্জাতিক ডেপেলপমেন্ট এইড (সিডা) থেকেও। আইসিডিডিআরবির অনুমতি সাপেক্ষে প্রজেক্টটির নমনীয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা যাচাইয়ে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মতলব হাসপাতালে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়েছে। (লন্ডনভিত্তিক সংবাদ নেটওয়ার্ক সাইদেভ ডটনেট অবলম্বনে)
 
বিবার্তা/ফারিজ/কাফী
 
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com