জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের আবসান সমস্যায় নতুন হল নির্মাণের স্বপ্ন দেখালেও বাস্তবে তা আলোর মুখ দেখছে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে হল নির্মাণের কথা শুনে শিক্ষার্থীরা আশা করেছিলেন এবার হয়েতো শিগগিরই কাজ শুরু হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত হলের একটি সাইনবোর্ডই ছিল ভরসা। কিন্তু বিধি বাম। সেই সাইনবোর্ডটি শেষ পর্য়ন্ত ধসে পড়েছে।
তবে ভিসি বলেছেন, জুলাইয়ে হল নির্মাণ কাজ শুরু হবে। জানা গেছে, কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধন করতে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীকে দেখানোর উদেশ্যে নব নির্মিত কারাগারের আশেপাশে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর হল’ নামে বেশ কিছু সাইনবোর্ড টানায় জবি প্রশাসন।
অথচ যে জমিতে হল নির্মাণের কথা ভাবছে সেখানে এখন পর্যন্ত মাটি ভরাট করা হয় নি। এমন কি ভবনের নকশা পর্যন্ত তৈরী করা হয়নি। কিন্তু টানানো হয়েছে সাইনবোর্ড। লোক দেখানো সেই সাইনবোর্ড মাস ঘুরতে না ঘুরতেই হেলে পড়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প নামের একশ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় ২০১০ সালের অক্টোবরে মহাজোট সরকার প্রথম দফায় ক্ষমতায় আসার পর। কিন্তু প্রশাসনের অদক্ষতা ও সরকার সমর্থক ছাত্র নেতাদের চাপে ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ প্রকল্পের টাকায় নতুন একাডেমিক ভবনের সাত তলা থেকে ষোল তলা পর্যন্ত নির্মাণ এবং একটি ছাত্রী হল নির্মাণ করার কথা। কিন্তু প্রথম তিন বছরে কোন কাজ শুরুই করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রকল্প অনুমোদনের পর প্রথম পাঁচ বছরে ৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় প্রকল্পটি ডেড (মৃত) প্রজেক্টের (প্রকল্প) তালিকায় চলে যায়।
এক পর্যায়ে ২০১৪ সালের শেষের দিকে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বিলুপ্ত হওয়ার উপক্রম হলে বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান প্রকল্পটির মেয়াদ বৃদ্ধি করিয়ে নেন। কিন্তু যে গতিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা তা করছেন না প্রশাসন।
পাশাপাশি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান ২৫০ কোটি টাকা মূল্যের জবির অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প নামে আরেকটি প্রকল্প চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবরা কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। এই প্রকল্পটি চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শুরু হয়েছে বলে সাংবাদিকদের একাধিকবার বলেছেন ভিসি।
গত ফেব্রুয়ারিতে একটি অনলাইনকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছিলেন, সরকারের কাছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫০ কোটি টাকার একটি অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প আমরা কাছে জমা দিয়েছি। যার কার্যক্রম শুরু হয়েছে ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারিতে। এখন এটি প্লানিং পর্যায়ে রয়েছে। এটি সরকারের তালিকা ভুক্ত উন্নয়ন প্রকল্প। এটি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন হয়ে একনেকে যাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।
এ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ তলা বিশিষ্ট বিজ্ঞান ভবন ও ছেলেদের জন্য ১০০০ আসন বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু হল নির্মাণ। হলের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে কেরানীগঞ্জ কারাগারের বিপরীত আমাদের ক্রয়কৃত জায়গায়। ওখানে হল করার মত উঁচু জায়গা আছে।
তবে, কিছু অসমতল থাকায় সেখানে ভরাট করতে হবে। একটি বিশ তলা ভবন করতে হলে এমনিতেই মাটি গর্ত করতে হয়। আশা করছি, আগামী জুলাই মাসের আগেই একনেকে প্রকল্পটি পাশ হলে নির্মান কাজ শুরু হবে। চলতি বর্ষা মৌসুমেই জমি ভরাট করতে পারব বলে আশা করছি।
বিবার্তা/আদনান/এম হায়দার