সড়ক আর মহাসড়কে অধিকতর নিরাপদ ড্রাইভিং নিশ্চিত করতে প্রচলিত ড্রাইভিং লাইসেন্সের ডিজিটাল স্মার্ট কার্ডের আরও আধুনিকায়ন হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ড্রাইভিং লাইসেন্সের নতুন স্মার্ট কার্ড শুধু টেকসইই হবে না, আরও আধুনিক হবে। এই লক্ষ্যে সরকার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি ১৫ লাখ ডিজিটাল স্মার্ট কার্ড কিনছে।৭৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকায় এ কার্ড কেনা হবে।
বর্তমানে ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রতিটি স্মার্ট কার্ডের দাম ৩২৮ টাকা। তবে নতুন ‘পলিকার্বোনেটেড ডুয়েল ইন্টারফেস স্মার্ট কার্ডের জন্য গুণতে হবে ৪৯৯ টাকা। প্রতি কার্ডে দাম বাড়ছে ৪৯ দশমিক ৪৩ টাকা।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আগামী বৈঠকে অনুমোদনের জন্য এই প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনায় দেখা যায়, স্মার্ট কার্ড তৈরির জন্য দরপত্র আহবান করা হলে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ পায় টাইগার আইটি বাংলাদেশ লিমিটেড। ৭৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকার মধ্যে ভ্যাট ১১ কোটি ২৪ লাখ এবং এআইটি সাত কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
বর্তমান স্মার্ট কার্ডের ম্যাটারিয়াল পিভিসি হলেও প্রস্তাবিত পলিকার্বোনেট স্মার্ট কার্ডের ম্যাটারিয়াল পিভিসির চেয়ে বেশি টেকসই ও উন্নত।
এছাড়া, বতর্মান লাইসেন্স কার্ড কন্টাক্ট চিপযুক্ত হলেও প্রস্তাবিত কার্ডে একই সঙ্গে কন্টাক্ট ও কন্টাক্টলেস কার্ডের সুবিধা রয়েছে।
জানা গেছে, উন্নত গ্রাহকসেবা দিতে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের ছয়টি সার্কেল অফিসে টোকেন ডিসপেন্সারযুক্ত কিউ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করা হবে। এছাড়া পলিকার্বোনেট কার্ড লেজার এনগ্রেডিং সিস্টেমের মাধ্যমে এসব স্মার্ট কার্ড প্রিন্ট করা হবে এবং প্রিন্টের পর অটোমেটিক কোয়ালিটি চেক সম্পন্ন হবে। এ ধরনের প্রিন্টিংয়ের কোয়ালিটি অনেক উন্নত ও টেকসই বলে জানা গেছে।
২০১১ সালে পাঁচ বছর মেয়াদে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ১১ লাখ ৫০ হাজার ডিজিটাল স্মার্ট কার্ড সরবরাহ করে একই প্রতিষ্ঠান। তখন স্বাক্ষরিত চুক্তির মোট মূল্য ছিল ৩৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় চলতি বছরের ৫ মার্চ। পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৭৪(৪) অনুযায়ী ওই চুক্তি মূল্যের অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ বাড়িয়ে চুক্তির মেয়াদ বর্ধিত করা হয় চলতি বছরের ৩ অক্টোবর পর্যন্ত।
বিআরটিএ কর্মকর্তারা বলছেন, ডিজিটাল স্মার্ট কার্ড চালু হওয়ার ফলে ভুয়া, জাল ও অবৈধ লাইসেন্স ব্যবহারের প্রবণতা কমেছে। আর নতুন স্মার্ট কার্ডে লাইসেন্সধারীর বায়োমেট্রিক্সসহ অন্যান্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নকল করার সুযোগ থাকবে না।
বিআরটিএ’র তথ্য অনুযায়ী ২০১৬ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ডিজিটাল ড্রাইভিং লাইসেন্স বিতরণ হয়েছে ১১ লাখ ৩০ হাজার। পেশাদার চালকদের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর এবং অপেশাদার চালকদের ক্ষেত্রে ১০ বছর মেয়াদে লাইসেন্স ইস্যু নবায়ন করা হয়।
বিবার্তা/মৌসুমী/জিয়া